ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মার্চ-এপ্রিলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৫, ২০ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২১:০৫, ২০ জানুয়ারি ২০২১
মার্চ-এপ্রিলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

আগামী মার্চ-এপ্রিলে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। 

বুধবার (২০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত রোহিঙ্গাদের জন্য চায়না সরকার প্রদত্ত জরুরি চাল সহায়তা বিষয়ক অনলাইন সার্টিফিকেট স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ আশাবাদ ব‌্যক্ত করেন। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের দেওয়া তালিকা থেকে ৪১ হাজার ৭১৯ জনকে শনাক্ত করেছে মিয়ানমার। এই তালিকা ধরে আগামী মার্চ-এপ্রিলে প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করা যায়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৮ লাখ ২৯ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, সেখানে থেকে তারা (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমার সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। মিয়ানমার সরকার ৪১ হাজার ৭১৯ জনকে ভেরিফাই করেছে।  তাদের নেওয়ার কথা তারা জানিয়েছে।

তিনি বলেন, মানবিক কারণে এক মিলিয়নেরও বেশি মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ সরকার আশ্রয় দিয়েছে।  তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করানো যায় ততই সবার জন্য মঙ্গল।

চলমান আলোচনা অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকাল বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সব বিষয়ে পজিটিভ আলোচনা হয়েছে।  মিয়ানমার রিয়ালাইজ করেছে তাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া দরকার। বাংলাদেশও ফিল করে তারা (রোহিঙ্গা) সম্মানের সঙ্গে নাগরিক অধিকার নিয়ে ফিরে যাক। চীন সরকারও চায় বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে তাদের ফিরে যাওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের গ্রামভিত্তিক রিপ্যাট্রিয়েশনটা চায়।  কিন্তু মিয়ানমার সরকার চায় বাংলাদেশ সরকার যে তালিকা দিয়েছে এবং যে তালিকাটা তারা ভেরিফাইড করেছে সেই তালিকা অনুযায়ী ফেরত নিতে চায়। এই জায়গায় গতকালকের মিটিং শেষ হয়েছে।  আশা করি পরবর্তী মিটিংয়ে আরও অ্যামিকেবল সলিউশন আসবে।

‘আমরা গতকাল চীন ও মিয়ানমারের যে সদিচ্ছা দেখেছি, সবাই আশা করছে, তিনটি পক্ষই আশা করছে আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে প্রত্যাবাসান শুরু হবে। 

বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত বন্ধু উল্লেখ করে এনামুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য চীন সরকার ২ হাজার ৫৫৪ মেট্রিক টন চাল দিয়েছে।  গত ডিসেম্বরে এই চাল আমরা পেয়েছি। চাল এখনও রোহিঙ্গাদের বিতরণ করা হচ্ছে।  এজন্য আজকে একটি সাইনিং হয়েছে।

‘পদ্মা সেতুসহ অনেক বড় বড় স্থাপনা নির্মাণে চায়না কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিতে আমাদের পাশে রয়েছে।  বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে প্রত্যাবর্তনে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের যেমন চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, একইভাবে মিয়ানমারের সঙ্গেও তাদের (চীনের) বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, মিয়ানমারের উন্নয়নে চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সেই জায়গায় চীন যদি সত্যিকারভাবে চায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই তারা মিয়ানমার সরকারকে প্রভাবিত করতে পারবে।

এনামুর রহমান বলেন, আমাদের বক্তব্য ও গতকালের মিটিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তাদের শতভাগ ইচ্ছা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের যে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সেই সম্পর্ক তারা বজায় রাখবেন, বাংলাদেশের সব সমস্যা সমাধানের জন্য তারা আমাদের পাশে থাকবেন। স্পেশালি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে তারা কাজ করে যাবেন।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন শরণার্থী প্রত্যাবর্তন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) শাহ রেজওয়ান হায়াত, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসিন এবং চীন সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি ঝিমি স্বাক্ষর করেন।

নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়