ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জাটকা রক্ষায় ২৬ হাজার ৩০৫ টন গম বরাদ্দ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৩:৫৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
জাটকা রক্ষায় ২৬ হাজার ৩০৫ টন গম বরাদ্দ

ফাইল ছবি

ইলিশ সমৃদ্ধ জেলায় জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় চলতি অর্থবছরে ২৬ হাজার ৩০৫ দশমিক ২০ টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ করেছে সরকার।  দেশের ২০ জেলার জাটকা সম্পৃক্ত ৯৮ উপজেলায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮১৫টি জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিতে এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে এ সংক্রান্ত মঞ্জুরি  চিঠি দেওয়া হয়েছে।  আগামী ২২ মার্চের মধ্যে ভিজিএফ চাল যথানিয়মে উত্তোলন ও সুবিধাভোগী জেলে পরিবারের মাঝে মঞ্জুরি করা গম বিতরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

সূত্র জানায়, দেশে ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে সরকার প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশেষ করে ইলিশ প্রজননকালে এবং জাটকা ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।  কিন্তু দেখা গেছে,  মাছ শিকারের ওপর নির্ভরশীল বেশির ভাগ জেলে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইলিশ শিকার করে।  এছাড়া এ সময় প্রচুর জাটকা ধরা হয়। নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের ইলিশ শিকার থেকে বিরত থাকতে তাদের দুই মাসের রেশন দেওয়া হয়।

এরই অংশ হিসেবে প্রতি বছরের মতো এবারও চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে ফেব্রুয়ারি-মার্চ দুই মাস প্রতিটি নিবন্ধিত ও কার্ডধারী জেলে পরিবারকে মাসে ৪০ কেজি হারে ২ মাসে ৮০ কেজি চাল দেওয়া হবে।

বরাদ্দপ্রাপ্ত উপজেলায় হলো ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ। মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয়, দৌলতপুর ও হরিরামপুর।  মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর, শ্রীনগর, লৌহজং, টঙ্গিবাড়ী ও গজারিয়া। ফরিদপুর জেলার সদর, মধুখালী,সদরপুর ও চরভদ্রাসন। রাজবাড়ী  জেলার সদর, পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ। শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, ভেদরগঞ্জ, নড়িয়া ও গোসাইরহাট। মাদারীপুর জেলার সদর, কালকিনি ও শিবচর।

চট্টগ্রাম জেলার সদর, বাঁশখালী, সীতাকুণ্ডু, সন্ধীপ, আনোয়ারা ও মীরসরাই।  ফেনী জেলার সোনাগাজী।  নোয়াখালী জেলার সদর, হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ। লক্ষ্মীপুর জেলার সদর, রামগতি, রায়পুর ও কমলনগর।  চাঁদপুর জেলার সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ। বাগেরহাট জেলার সদর, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, রামপাল, চিতলমারি, শরণখোলা ও ফকিরহাট।

সিরাজগঞ্জ জেলার সদর, চৌহালি, বেলকুচি, কাজীপুর ও শাহজাদপুর।  বরিশাল জেলার সদর,  মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, বাবুগঞ্জ, বানারীপাড়া, উজিরপুর, গৌরনদী ও বাকেরগঞ্জ। পিরোজপুর জেলার সদর, মঠবাড়ীয়া, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী ও কাউখালী। পটুয়াখালী জেলার সদর, কলাপাড়া, বাউফল, গলাচিপা, রাঙাবালি, মির্জাগঞ্জ, দশমিনা ও দুমকি।  ভোলা জেলার সদর, বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, দৌলতখান, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও মনপুরা। বরগুনা জেলার সদর, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী এবং ঝালকাঠি জেলার সদর,  কাঁঠালিয়া, নলছিটি ও রাজাপুর।

এরআগে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাজেটে মৎস্য সংরক্ষণ অভিযান পরিচালনা করার জন্য প্রধান মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী  জাটকা আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাত করা, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৪ মাস জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের সরকার মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকে।

তবে প্রয়োজনের তুলনায় দুই মাসে ৮০ কেজি চাল খুবই কম। এ চাল দিয়ে বেশির ভাগ জেলের পক্ষে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। ফলে অনেকেই সরকারি সহায়তা পাওয়ার পরও গোপনে জাটকা শিকারে নামতে বাধ্য হন বলে জানান চরভদ্রাসনের জেলে ইউনুস আলী।

তিনি বলেন, জেলে পরিবারগুলোতে সদস্য সংখ্যা বেশি।  প্রতিদিন নদী বা সমুদ্রে মাছ ধরে যা পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে যায়।  কিন্তু কয়েক মাস ইলিশ এবং জাটক ধরা বন্ধ থাকায় অনেকেরই সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।  এছাড়াও তালিকার বাইরেও অনেক জেলে রয়েছেন যারা সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন না। তাদের সমস্যা আরও বেশি।

হাসনাত/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়