উন্নয়নের পথে ভাষা কোনো বাধা হতে পারে না: পরিকল্পনামন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
‘ইংরেজি না জানায় প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেছে’ এমন ধারণার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘যেকোনো উন্নয়নে ভাষা কোনো বাধা হতে পারে না। এককথায় ভাষার সঙ্গে উন্নয়নে কোনো সম্পর্ক নেই।’
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘জীবনের প্রতিটি পদেই আমরা কয়েকটি বিষয়ের চারপাশে ঘোরাফেরা করি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আমাদের মাতৃভাষা। মোটামুটি দীর্ঘ জীবন এই পৃথিবীতে আছি। গত প্রায় ৪০ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে বিচরণ করেছি। সরকারি কাজে ও রাজনৈতিক কাজে।’
এম এ মান্নান বলেন, ‘দেশের ওপর মহলের ৩ থেকে ৪ শতাংশ লোক মনে করে, ভাষাগত কারণে আমরা অনুন্নত। ইংরেজি না জানার ফলে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেছে। বিশাল বিশাল মানুষ, পণ্ডিত মানুষ, এমনকী শক্তিশালী মানুষ এসব কথা বলেন। তাদের অনুসরণ করে অন্যরাও এ ধরনের কথা বলেন। আমি নিজে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করলাম, কেন তারা এটা করেন?’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আসলেই কি ভাষার সঙ্গে বৈশিক উন্নতির সরাসরি কোনো যোগসূত্র আছে? যেদিকে তাকাই, ঘর থেকে বের হলে পূবদিকে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম হয়ে চীন, জাপান, কোরিয়া। তাদের বৈশিক উন্নয়ন আমাদের দেশের থেকে অনেক বেশি। তারা খেয়ে-পের সুখে, শান্তিতে আছে। শৃঙ্খলাপরায়ণ জীবন ও ট্রাফিকের কোনো সমস্যা নেই। আচার-আচরণ খুবই ভালো। কিন্তু ইংরেজি তো দেখলাম না কোথাও। সর্বত্রই আমি তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহার করতে দেখেছি।’
বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বৈশিক উন্নয়নের মাপকাঠিগুলো আমরা সবসময় নজরে রাখি। মূলত প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা চমৎকার উন্নয়ন করেছে তারা। শুধু আমাদের দেশের এই ধারণা থেকেই আমি চিন্তা করলাম, হয়তো ভাষার সঙ্গে উন্নয়নের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের প্রয়োজনেই আমাদের ভাষায় ফিরে যেতে হবে। নইলে আমাদের সঙ্গে দেশের মানুষের যে একটা ফারাক, এটা বাড়তে থাকবে। বর্তমানে গ্রামের মানুষের সঙ্গে শহরের মানুষের প্রতিটি ক্ষেত্রে ফারাক রয়েছে। এই ফারাকের প্রধান বাধা হলো ভাষার ব্যাপারটি বলে আমার মনে হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি মাতৃভাষায় ফিরে গেলে এবং মাতৃভাষাকে সামনে রাখলে অনুন্নয়নের বিষয়গুলো মোকাবিলা করতে পারবো। এজন্য ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।’ স্বাধীনতাকে আরও সুরক্ষিত ও সুসংহত করার জন্য সচেতনতা হওয়া খুবই প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ঢাকা/হাসিবুল/এনই
আরো পড়ুন