উৎসবমুখর পরিবেশে হবে পঞ্চম ধাপের নির্বাচন: ইসি সচিব

উৎসবমুখর পরিবেশে পঞ্চম ধাপের পৌর ও উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।  

তিনি বলেন, নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি একটা অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর পরিবেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
চলমান পৌরসভা নির্বাচনের পঞ্চম ধাপের ২৯টি পৌরসভায় আগামীকাল (রোববার) সাধারণ ও চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। 

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সচিব এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়টি নজরে আনলে সচিব বলেন, যেখানেই কোনো সমস্যা হচ্ছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে সহিংসতায় মারা যাওয়া এটা অবশ্যই দুঃখজনক। তবে আমরা আশা করছি আগামী দিনে এ রকম ঘটনা আর ঘটবে না। এটাই আমাদের আশা, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা ওয়েট করি, দেখি। 

তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচন ভালো হবে। 

ভোটারদের কেন্দ্রে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আশা করি সেই পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। আমরা কিছুক্ষণ আগেও রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন যে পরিস্থিতি ভালো। 

সচিব বলেন, যেহেতু সব পৌরসভায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ করছি, ব্যালট পেপার ছেঁড়ার কোনো বিষয় নেই। যার ভোট শুধু তিনি ভোট দিতে পারবেন।  

ঝিনাইদহের শৈলকুপা, ফরিদপুরের মধুখালী, রাজশাহীর পবা ও কুমিল্লার দেবিদ্বারে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হবে।  এছাড়া এর আগে অনুষ্ঠিত সাতটি পৌরসভায় বন্ধ ঘোষিত ভোটকেন্দ্রগুলো এবং মৃত্যুজনিত কারণে চট্টগ্রাম সিটির ৩১ নম্বর ওয়ার্ড, ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার ৮ নম্বর, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৮ নম্বর ও সিরাজগঞ্জ পৌরসভর ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদেও ভোট হবে এদিন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটির ওই ওয়ার্ড ও শৈলকুপায় ভোট হবে ইভিএমে।

এ উপলক্ষে নির্বাচনি এলাকায় পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বাড়তি সদস্য মাঠে নেমেছেন। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। নির্বাচনি এলাকায় যান চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্রচার।

১৯ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে নির্বাচনের জন্য ৩১ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। পরে অন্য ধাপ থেকে পঞ্চমে যুক্ত হয় সৈয়দপুর পৌরসভা। অপরদিকে উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে যশোর পৌরসভার ভোট স্থগিত করা হয়।

ভোটগ্রহণের আগ মুহূর্তে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে ইসি। চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলরসহ সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পান।

যে ২৯ পৌরসভায় আজ ভোট
যশোরের কেশবপুর; ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর; চট্টগ্রামের মিরসরাই, বারইয়ারহাট ও রাঙ্গুনিয়া; কিশোরগঞ্জের ভৈরব; জামালপুরের সদর, মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর; ময়মনসিংহের নান্দাইল; মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, গাজীপুরের কালীগঞ্জ; রংপুরের হারাগাছ; রাজশাহীর দুর্গাপুর ও চারঘাট; চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল; বগুড়া সদর; জয়পুরহাট সদর; মাদারীপুর সদর ও শিবচর; ভোলার সদর ও চরফ্যাশন; হবিগঞ্জ সদর; চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও মতলব; ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর; লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও রংপুরের সৈয়দপুর পৌরসভা। 

এসব পৌরসভায় ২৯১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১ হাজার ২৭০ জন, ৯৭টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৪২জন এবং ২৯টি মেয়র পদে ১০০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৬২৫টি ভোট কেন্দ্রের ৪ হাজার ২২৯ ভোটকক্ষে ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৯০ এবং মহিলা ভোটার ৭ লাখ ১১ হাজার ৮৫০ জন।