ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জরুরি ভিত্তিতে আরও ২ লাখ মেট্রিক টন চাল কিনছে সরকার

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ৯ মার্চ ২০২১  
জরুরি ভিত্তিতে আরও ২ লাখ মেট্রিক টন চাল কিনছে সরকার

নিরাপদ মজুদ নিশ্চিত করতে জরুরি প্রয়োজনে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে দুই লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ জন্য মোট ব্যয় হবে ৯৬২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাকোন্নাখন ন্যাশনাল ফার্মার্স কাউন্সিল থেকে ১.৫০ লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কিনতে ব্যয় হবে ৭০৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ভিয়েতনাম থেকে বাকি ৫০ হাজার আতপ চাল কিনতে ব্যয় হবে ২৫৬ কোটি ৫২ হাজার টাকা।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উন্নততর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনসাধারণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কৃষকের উৎসাহদাম দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার প্রতি বোরো ও আমন মৌসুমে ধান চাল ক্রয় করে থাকে। কিন্তু বিগত বোরো ২০২০ মৌসুমে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৫৪.৪৯ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।

অন্যদিকে, চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে ২.০৭ লাখ মেট্রিক টন ধান এবং ৬.৫০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত ০৩.০৩.২০২১ তারিখ পর্যন্ত মাত্র ৭০,২১০ মেট্রিক টন চাল ও ১১,৭৯৮ মেট্রিক টন ধান সংগৃহীত হয়েছে। তাছাড়া ঘন ঘন বন্যা, অতি বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় আমফানসহ করোনা মহামারির কারণে উৎপাদন কিছুটা ব্যহত  হয়। এ অবস্থায় বাজারে ধান ও চালের দাম বাড়ছে।

এ পরিস্থিতিতে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ নিরাপত্তা মজুত সুসংসহত করতে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবানের পাশাপাশি সরকার থেকে সরকার (জি টু জি) পর্যায়ে চাল আমদানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। গত ০৩/০৩/২০২১ তারিখের দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী মজুতের পরিমাণ: চাল- ৫.৩০ লাখ মেট্রিক টন ও গম- ১.০৩ লাখ মেট্রিক টন, সর্বমোট ৬.৩৩ লাখ মেট্রিক টন।

দেশের সরকারি মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করণার্থে আমদানির ক্ষেত্রে বহুবিধ উৎস থাকলে দ্রুত খাদ্যশস্য আমদানি করা সহজতর হয় এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ মূল্যে খাদ্যশস্য ক্রয় করা সম্ভব হয়। এই বিবেচনায়  থাইল্যান্ডের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে থাইল্যান্ড থেকে চাল আমদানির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে দুদেশের মধ্যে ভার্চুয়াল আলোচনার মাধ্যমে ১.৫০ লাখ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল, প্রতি মেট্রিক টন ৫৫৫ মার্কিন ডলার দরে ৬০ শতাংশ চট্রগ্রাম এবং ৪০শতাংশ মোংলা পোর্টের মাধ্যমে আমদানির সিদ্ধান্ত হয় এবং এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৭০৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

অন্যদিকে ভিয়েতনামের সাউদার্র্ন ফুড করপোরেশন (ভিনাফুড ২) এর সঙ্গে নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি করা হবে। প্রতি মেট্রিক টন আতপ চালের দাম ৬০৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ব্যয় হবে  ২৫৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এই ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল চট্রগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি হবে।

সূত্র জানায়, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে এসব চাল আমদানি করতে বেশ সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। এ অবস্থায় ভার্চুয়াল  আলোচনার মাধ্যমে এসব চাল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ৩৩ ধারায় পণ্য, কার্য ইত্যাদি ক্রয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগের বিধান রয়েছে।

পক্ষান্তরে ৬৮ (১) ধারায় সরকার রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে বা বিপর্যকর কোন ঘটনা মোকাবেলা করার জন্য জনস্বার্থে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ক্রয় কাজ সম্পন্ন করার বিষয় উল্লেখ আছে। এজন্য বিষয়টি অনুমোদন জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়