ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঈদে আর্থিক সহায়তা পাবে ৩৫ লাখ ২৫ হাজার পরিবার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৯, ১৮ এপ্রিল ২০২১  
ঈদে আর্থিক সহায়তা পাবে ৩৫ লাখ ২৫ হাজার পরিবার

ফাইল ছবি

আসন্ন ঈদে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৩৫ লাখ ২৫ হাজার পরিবার উপহার হিসেবে আর্থিক সহায়তা পাবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

রোববার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আসন্ন ঈদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঈদ উপহার হিসেবে ৩৫ লাখ ২৫ হাজার দরিদ্র পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। গত লকডাউনে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে ঘোষণা করা হয়েছিল প্রণোদনা প্যাকেজ। এবারও আর্থিক সহায়তা নগদ সহায়তার পাশাপাশি তালিকার বাইরে থাকা ছিন্নমূল ভাসমান মানুষদের সহায়তা দিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  যেসব দরিদ্র পরিবার নতুন করে সংকটে পড়বে তাদের তালিকা করতে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, করোনাই জনমানুষের জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয় সাধনের ব্যাপারে শেখ হাসিনার সরকার আন্তরিকভাবে সচেষ্ট।  প্রথমত সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা এরপর জীবিকা। জীবিকার জন্য আমরা অনেকের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছি। সরকার করোনা এবং লকডাউনে অসহায় কর্মহীন মানুষের আর্থিক সুরক্ষায় ইতিমধ্যে নিয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ।  এর ধারাবাহিকতায় লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত এক কোটি ২৫ লাখ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। 

সস্মিলিতভাবে করোনা মহামারি মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে অসহায় কর্মহীন মানুষের পাশে আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে।  বিপন্ন মানুষের পাশে সবার আগে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিবেশীর বিপদে সংকটে প্রতিবেশীরাই এগিয়ে আসে। করোনা মহামারির এ বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশে যারা অসহায় কর্মহীন তাদের সহযোগিতায় সরকারের পাশাপাশি আসুন দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মানবতার হাত প্রসারিত করি। সচ্ছল প্রতিবেশীর উদাহরণ সহযোগিতা দরিদ্র প্রতিবেশীর সংকট কাটিয়ে উঠতে সহজ করে। পবিত্র রমজানের ত্যাগ ও সংযমের মাসে অসহায় দরিদ্রদের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদানে আসুন এগিয়ে যাই। 

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দেশের রাজনীতিকে করোনাকালেও বন্ধ নেই। মাঠের রাজনীতি না থাকলেও আমাদের কথাবার্তায়, আমাদের বক্তব্যে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে রাজনীতি করাই যেন এখন প্রধান এজেন্ডা।  এজন্য এ বিষয়টিতে আমি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলবো তারা গণতন্ত্র নিয়ে নানা কথা বলেন।  দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আগে নিজ দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।  কথায় আচরণে রাজনীতিতে আপদমস্তক অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মূল্যবোধ চর্চা করে বিএনপির কোন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়? হালুয়া-রুটির গণতন্ত্র এখন আর জনগণ চায় না। কারফিউ গণতন্ত্র জনগণ এখন চায়না। হ্যাঁ-না ভোটের ১৪ শতাংশ ভোটার এটাও জনগণ দেখতে চায় না। 

তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি করোনাভাইরাস রাজনৈতিক দল চেনে না।  প্রতিদিনই আমরা হারাচ্ছি মূল্যবান প্রাণ। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এ সময় দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করে করোনা সংকটে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। আসুন আমরা সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করি। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলি। 

এর আগে সেতু বিভাগের সাথে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পর্যালনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের। সভায় তিনি বলেন, আমাদের প্রথম প্রায়রিটি পদ্মা সেতু, তারপর চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট এর সেতু বিভাগের ভিভিএর যে অংশটা সেটা। এ প্রকল্পগুলো হচ্ছে টপ প্রায়রিটি।

তিনি বলেন, কোভিড ভাইরাসের কারণে এ কাজগুলো স্থবির হওয়ার সুযোগ নেই।  কাজগুলো যথারীতি এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।  পদ্মা সেতুতে আজকে সর্বশেষ অগ্রগতি ৮৫ ভাগ। এটা ভালো অগ্রগতি।  আমি আশা করি, এ প্রচেষ্টা ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।  আগামী বছর জুন মাসে আমরা জাতিকে জানিয়েছি, পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করব।  এর মধ্যে কাজটা আশা করি সম্পন্ন হবে।

তিনি আরও বলেন, টানেলের কাজটা ভালো এগিয়ে যাচ্ছে। প্রথম টিউবের পর দ্বিতীয় টিউব এক কিলোমিটার হয়ে গেছে, কাজ চলছে।  এখন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যে অংশটা সেতু বিভাগের, সে অংশটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাস্তাটা ইউজেবল, পাসএবল করে রাখতে হবে। 

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এ প্রকল্পগুলোতে। তাই এগুলোর গতি বজায় রাখতে হবে দরকার হলে আরো বাড়াতে হবে। আমরা যে সময়সীমার টার্গেট নিয়েছি সে অনুযায়ী শেষ করতে হবে।
 

পারভেজ/সাইফ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়