শাকিবের ছোট কাঁধে বড় দায়িত্ব
মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম
রাত দেড়টা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছে এক শিশু। হাতে ফ্লাস্ক। চায়ের খদ্দেরের জন্য অপেক্ষা করছে সে। সন্ধ্যার পর থেকে কোমল হাতে বয়ে চলছে কয়েক লিটার ওজনের চা-ভর্তি ফ্লাস্ক।
ওই শিশুর নাম শাকিব। বয়স ১১ থেকে ১২ বছর। এ বয়সেই উপার্জনের জন্য পথে নামতে হয়েছে তাকে। ছোট কাঁধে বইতে হচ্ছে বড় দায়িত্ব।
সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত চা বিক্রি করেছে শাকিব। ক্লান্ত শরীর যেন আর চলতে চাচ্ছে না। অবশেষে ঘুম ঘুম চোখে বাসায় ফিরছে সে। চা বিক্রির টাকা দিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোনের জন্য তরমুজ কিনেছে শাকিব। সেই তরমুজ নিয়ে বাসায় ফেরার পথে শাকিবের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
সে জানায়, গ্রামে উপার্জন না থাকায় সাত-আট মাস আগে পেটের দায়ে ঢাকায় চলে আসে শাকিবের পরিবার। ছোট একটি রুমে গাদাগাদি করে থাকতে হয় পরিবারের ছয় সদস্যকে।
শাকিব বলে, ‘বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মা-বাবা আর চার ভাই-বোন একসঙ্গে থাকি। বাবার একার ইনকামে সংসার চলে না। তাই এই পথে নামতে হয়েছে। ৭ মাস ধরে এভাবেই চা বিক্রি করছি।’
এখন রমজান মাস। এজন্য সন্ধ্যার পর ফ্লাস্কে চা নিয়ে বের হয় শাকিব। আগে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চা বিক্রি করত সে। রাস্তায়, অলি-গলিতে ঘুরে প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়। যা আয় হয় তা মায়ের হাতে তুলে দেয়। এতে তার মাও খুশি হয়।
লেখাপড়া করতে মনে চায় শাকিবের। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে সে। কিন্তু অভাবের কারণে পিএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। সুযোগ পেলে আবারও স্কুলে ভর্তি হতে চায় সে।
শাকিব বলে, ‘সবার মতো আমারও লেখাপড়া করতে মন চায়। স্কুলে যেতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু এই অভাবের সংসারে আমার পড়াশোনা হবে না। অভাবের কারণে আমি পড়াশোনা করতে পারছি না। আমি চাই, আমার ভাই-বোনরা যেন ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারে।’
শাকিবদের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তারা এখন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শেখদী এলাকায় থাকে।
## ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তথ্যে গড়মিল, বাস্তবায়নে কচ্ছপ গতি
## রান্না ঘরে গৃহকর্মীর নীরব কান্না
## করোনায় বিপাকে শিশু শ্রমিকরা
## মালিক-শ্রমিক নির্বিশেষ, মুজিববর্ষে গড়বো দেশ: মহান মে দিবস আজ
## করোনায় শ্রমজীবী মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
##‘সরকার শ্রমজীবী মানুষের জন্য সর্বাত্মক কার্যক্রম চালাচ্ছে’
ঢাকা/মামুন/রফিক
আরো পড়ুন