গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি কেউ মানছেন, কেউ মানছেন না
ছবি: রাইজিংবিডি
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি কেউ মানছেন, কেউ মানছেন না। এছাড়া প্রতি সিটে একজন নয় ডাবল যাত্রী নিয়ে চলছে অধিকাংশ পরিবহন।
বাস চলাচলের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৭ মে) রাজধানীতে এ চিত্র দেখা গেছে।
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে গুলিস্তান চলাচল করে তারাবো পরিবহন, শ্রাবণ, রজনীগন্ধা, সিল্ক সিটিসহ বেশকিছু পরিবহন। এসব পরিবহনে প্রতিটি আসনে যাত্রী পরিবহন করছে। অধিকাংশ যাত্রী-চালকদের মুখে মাস্ক থাকলেও কিছু চালক-হেলপার-যাত্রীর মুখে মাস্ক ছিল না। বাসে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে শ্রাবণ বাসের চালক সুজন হালদার বলেন, রাস্তায় যাত্রীর চাপ। রায়েরবাগ, শনিরআখড়া থেকে প্রতি সিটে ডাবল যাত্রী নিচ্ছি। দিনে দু-একবার ট্রাফিক পুলিশ ধরলে মামলা দেয়। অনেক দিন বাস বন্ধ ছিল। ঋণ করে চলেছি। বাড়তি যাত্রী না নিলে চলবো কীভাবে?
রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় মো. আতিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, গুলিস্তানে একটি দোকানে কাজ করি। এখান থেকে গুলিস্তান ১৫ টাকা ভাড়া। প্রতি সিটে একজন যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলে দুজন করে নিচ্ছে। যাত্রীর চাপ থাকায় প্রতিজনের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
রায়েরবাগে আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পল্টন যাবো। রায়েরবাগ থেকে পল্টন ২০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা করে নিচ্ছে। তাও আবার প্রতি সিটে দুজন করে নিচ্ছে।
রায়েরবাগ চেকপোস্টে দায়িত্বরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) এম সোহেল বলেন, এ রুটে পরিবহন সংকটের কারণে যাত্রীদের কেউ কেউ জোর করে গাড়িতে উঠেন। যাত্রীদের সচেতন হতে হবে। বিভিন্ন পরিবহন বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে এরকম বেশকিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া যাত্রী বেশি নেওয়ায় বিভিন্ন পরিবহন ও চালকের নামে মামলা করা হয়েছে।
এদিকে, রাজধানীর মিরপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মিরপুর-১ নম্বর ওভার ব্রিজের নিচে লাইন করে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলছে বাসের কন্ট্রাক্টর। তবে প্রথম দিনের তুলনায় আজ চিত্র ছিল ভিন্ন। প্রথম দিন মোটামুটিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও আজ তা একেবারেই মানা হচ্ছে না। অধিকাংশ বাসেই জীবাণুনাশক স্প্রে বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেখা যায়নি।
কথা হয় মিরপুর থেকে নিউমার্কেট যাওয়ার জন্য বাসে ওঠা যাত্রী মোহাম্মদ ইমন হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, নিউমার্কেট যাচ্ছি কিছু কেনাকাটা করার জন্য। তাই বাসের জন্য অপেক্ষা করে এখন উঠলাম। কিন্তু বাসের ড্রাইভার বা হেল্পাররা সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মানছেন না। অর্ধেক যাত্রীর বেশি নিচ্ছেন। আবার ভাড়াও নিচ্ছেন ৬০ শতাংশ বেশি।
তিনি বলেন, আমরা অনেকেই প্রতিবাদ করেছি বেশি যাত্রী না নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের কথা কানেই নিচ্ছেন না ড্রাইভার।
মিরপুর মেট্রো সার্ভিস পরিবহনের ড্রাইভার এ বিষয়ে বলেন, শুক্রবার তাই যাত্রী কম। এজন্য যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছি। বাস খালি নিয়ে গেলে তো আমাদের লস হবে। আমরা যাত্রী বেশি নিচ্ছি না। যাত্রীরাই জোর করে বাসে উঠে পড়ছেন। এখানে আমরা কি করতে পারি? আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই গাড়ি চালাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৬ মে) ভোর থেকে অর্ধেক যাত্রী এবং বর্ধিত ভাড়ায় গণপরিবহন চলছে।
আসাদ/হাসিবুল/সাইফ
আরো পড়ুন