ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট কর আরোপের দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:৪৮, ৯ মে ২০২১  
জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট কর আরোপের দাবি

তামাক পণ্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করে দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে সকল তামাকজাত পণ্যকে জনগণের ক্রয়সীমানার বাইরে নিয়ে যাওয়া স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জরুরি।

বাজেটকে সামনে রেখে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সিগারেটসহ সকল তামাক পণ্যে কর বৃদ্ধির দাবিতে রোববার (৯ মে) বেসরকারি মানবাধিকার ও গবেষণা সংস্থা ভয়েস ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকের কর বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক অনলাইন মত বিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় বক্তারা এই মতামত জানান।

আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। এতে সভাপতিত্ব করেছেন পিকেএসেফের চেয়ারপয়ার্সন এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেছেন ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এরোমা দত্ত, শিরীন আখতার, অসীম কুমার উকিল, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মোস্তাফিজুর রহমান, লিড পলিসি এডভাইজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাক ফ্রি কিডস।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভয়েসের প্রকল্প সমন্বয়ক জায়েদ সিদ্দিকী। প্রবন্ধে বলা হয় বাংলাদেশে প্রচলিত তামাক কর ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল যেখানে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন মাত্রার কর আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও অতীতে তামাকের ওপর কর আরোপ করে ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করা হলেও মানুষের আয় বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে তামাকের দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হয়নি বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় ২০১৭-১৮ সালে মাথাপিছু জাতীয় আয় (নমিন্যাল) বেড়েছে ২৫.৪ শতাংশ। কিন্তু এ সময়ে বেশিরভাগ সিগারেটের দাম প্রায় অপরিবর্তিত থেকেছে বা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশেষ করে নিম্ন স্তরের সিগারেটে কর বৃদ্ধির মাত্রা নগণ্য হওয়ায় তামাক পণ্য থেকে গেছে সহজলভ্য। এর ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বিড়ি সিগারেটের মতো ক্ষতিকর পণ্যের ব্যবহার কমানো সম্ভব হয়নি।

বিশ্বে সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথম দিকে। দেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। প্রতিবছর ১ লক্ষ্য ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে প্রাণ হারায় এবং অনেকে অকালে পঙ্গু হয়ে যান। কিন্তু সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুল প্রভৃতি তামাকজাত পণ্য সহজলভ্য হওয়ায় এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান কর বৃদ্ধির সপক্ষে নিজের অবস্থান জোরাল বলে ঘোষণা দেন এবং তামাকের বিরুদ্ধে লড়াইকে সবাইকে সংঘবদ্ধ থাকতে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, তামাক যে ক্ষতিকর পণ্য তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজে ঘোষণা দিয়েছেন যে ২০৪০ এর মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করবেন তখন এটাই সুবর্ণ সুযোগ তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি করার।

এ নিয়ে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করার আশ্বাস দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলেকুজ্জামান বলেন, এক শতাংশ স্বাস্থ্য সারচার্জের পাশাপাশি এক শতাংশ সারচার্জ যদি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নেয়া যায় তাহলে খুব ভালো হবে। ‘প্রধানমন্ত্রী তামাকমুক্ত দেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন কিন্তু সব কাজ উনি একা করতে পারবেন না। যারা কাজ করতে পারবেন তাদের এ বিষয়ে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে’ বলে তিনি মতামত দেন।

হাসান/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়