ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পররাষ্ট্রনীতিকে সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ১১ মে ২০২১  
পররাষ্ট্রনীতিকে সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিকে সমৃদ্ধ করতে সবার সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। 

মঙ্গলবার (১১ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পররাষ্ট্র নীতিকে আরও পরিণত ও যুগোপযোগী করার সম্ভাব্য রূপরেখা নিয়ে গতকাল ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সহযোগিতার আহ্বান জানান। 

এ সময় বাংলাদেশ স্বপ্লোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদাপর্ণের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তুলে ধরার অনুরোধ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের মর্যাদাশীল স্থানে অধিষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের পথকে মসৃণ করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। 

উপস্থিত রাজনীতিবিদ, সাবেক কূটনীতিক, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকরা দেশের ও বিশ্বের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সাফল্য বহুল প্রচারের ব্যবস্থা করার পক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন। জনবান্ধব কূটনীতির ভিত মজবুত করে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর  জনগণের সাথে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বাড়ানো ভবিষ্যৎ পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম মূল উপজীব্য হতে পারে বলে আলোচকরা মত প্রকাশ করেন। 

তারা নিজ নিজ অভিজ্ঞতা ও বিশ্লেষণের আলোকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এবং উন্নয়নকে টেকসই ও মসৃণ করার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র নীতির সম্ভাব্য সমন্বয় ও যুগোপযোগীকরণের রূপরেখার বিষয়ে নিজেদের মূল্যবান অভিমত ব্যক্ত করেন। তারা প্রত্যেকেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।  তারা এই অনুষ্ঠানমালা আয়োজনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্ব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। এছাড়া, বাংলাদেশের সাফল্য ও অগ্রযাত্রায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিশেষত কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অগ্রণী পদক্ষেপের জন্য তারা ধন্যবাদ জানান।

ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুতগতিতে ধাবমান বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে একটি নেতৃত্বশীল ও আস্থার স্থান লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।  বাংলাদেশের এই মর্যাদাশীল অবস্থানকে সুসংহত করা এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে তা মোকাবিলায় এখন থেকেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত সুধীসমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের মূল্যবান মতামত তুলে ধরার অনুরোধ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সময় বিশ্বের বৃহৎ ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রগুলো প্রায় ১৫০ দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের কাছ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা এবং ৩৩টি ভিডিও বার্তা পাওয়া গেছে।  এসব বার্তায় বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন। 

ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা, কোভিড-১৯ মহামারির মতো বিষয়গুলো মোকাবিলায় এ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। অর্থনৈতিক কূটনীতিকে বেগবান করার পাশাপাশি দূতাবাসগুলোর সেবার মান বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহকে জনমুখী করার জন্য ইতোমধ্যে ‘দূতাবাস’ অ্যাপ চালু করা হয়েছে যার মাধ্যমে ঘরে বসেই ৩৪টি সেবা পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশ দুই বছর মেয়াদে ডি-৮ এবং তিন বছর মেয়াদে Climate Vulnerable Forum (CVF)- এর সভাপতি দায়িত্ব পালন করছে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হাবিবে মিল্লাত, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মুবীন চৌধুরী ও তৌহিদ হোসেন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মনিরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম শাখাওয়াত হোসেন, এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী এবং মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম, সাবেক কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান ও মহিউদ্দিন আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক বেগম আমেনা মহসিন, ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, ড. দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক শাহাব এনাম খান, অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন, ড. প্রণব কুমার পাণ্ডে এবং সাংবাদিক আলতাফ পারভেজ।
 

হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়