ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কোলাকুলি-হাত মেলানো নেই, সালাম-শুভেচ্ছায় ঈদ উদযাপন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ১৪ মে ২০২১   আপডেট: ১১:০০, ১৪ মে ২০২১
কোলাকুলি-হাত মেলানো নেই, সালাম-শুভেচ্ছায় ঈদ উদযাপন

ঈদ জামাত শেষে কোলাকুলি থেকে বিরত থেকে বেরিয়ে আসছেন মুসল্লিরা

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় যথাযথ মর্যাদায় ধর্মীয় গাম্ভীর্য অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এবার অন্যরকম ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন দেশবাসী।

শুক্রবার (১৪ মে) সকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমসহ দেশের মসজিদে মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাতে শরিক হন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। আখেরি মোনাজাত শেষে করোনার কারণে চিরাচরিত ঈদের সেই কোলাকুলি, হাত মেলানো নেই। দূর থেকে সালাম দিয়ে এবং ঈদ মোবারক বলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় চলে। কোলাকুলি, হাত মেলানো থেকে বিরত থাকলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে আনন্দ উৎসবে পবিত্র ঈদ উদযাপন করছেন দেশবাসী।

ঈদের জামাত শেষে বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিরা কোলাকুলি না করে ঈদ মোবারক বলে ঈদের আনন্দে উৎসবে মিলিত হয়েছেন

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৭টায় প্রথম এবং সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান আর দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ বাকী নদভী। ঈদ জামাত শেষে করোনা থেকে মুক্তি, দেশ, জাতি ও মুসলিম মিল্লাতের সুখ শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন। বিশেষ করে ফিলিস্তিন, চীন, সিরিয়াসহ নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য দোয়া করেন।

করোনার কারণে প্রায় মুসল্লিদের মুখে মাস্ক ছিল, মাস্ক পরে শিশু কিশোররাও বাবার হাত ধরে ঈদের জামাতে অংশ নিতে বায়তুল মোকাররমে আসেন। জামাতে শরিক হন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী। 

দুই শিশু ছেলেকে নিয়ে বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে আসেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আবু বকর সিদ্দিক। 

তিনি বলেন, ‌‘ঈদের মূল আনন্দই হলো আজকে ধনি-গরিব, সুন্দর কালো ভেদাভেদ ভুলে বুক মিলিয়ে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করবো। হাত মেলাবো ঈদের আনন্দ উৎসবে শামিল হবো। কিন্তু করোনার কারণে আমরা আজ সেটা করতে পারিনি। খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। করোনা রোধে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।' 

সকাল ৬টায় মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশের জন্য বায়তুল মোকাররমের গেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর থেকে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ শুরু করেন। বায়তুল মোকাররমের প্রথম জামাত, দ্বিতীয় জামাতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ঢল নামে। রাজধানীর দূর দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা শরিক হন। মসজিদে হাত ধোঁয়া, জীবাণুনাশক কক্ষের ব্যবস্থা রাখা হয়। মসজিদের ভেতরে কাতার ফাঁক রেখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজের জন‌্য কাতারবন্দি হয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। বায়তুল মোকাররমের ঈদের জামাতে স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ নিশ্চিত করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শীর্ষকর্তারা কাজ করেন।

দ্বিতীয় ঈদ জামাত শেষে মুসল্লিদের বের হয়ে আসার দৃশ্য

মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ১৩ দফা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, নামাজের সময় মসজিদে গালিচা বিছানো যাবে না, নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে মুসল্লিদের, সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, মসজিদে প্রবেশের আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না, নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি ও হাত মেলানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনায় জাতীয় ঈদগাঁয় ঈদের প্রধান জামাত বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া, সারাদেশে খোলা জায়গায় নামাজ না আদায়ের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করছেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়