ঈদ শেষে ফেরা: ঝুঁকি বেশি, ভাড়াও বেশি
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন অনেকেই। করোনা সংক্রমণ রোধে সারা দেশে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে ঢাকায় আসতে হচ্ছে। বাস বন্ধ থাকায় প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে কয়েকগুন বেশি ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে আসছেন তারা।
শনিবার (১৫ মে) রাজধানীর সায়েদাবাদ টার্মিনাল, রায়েরবাগ, শনিরআখড়া বাসস্ট্যান্ড ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে গাড়ির চাপ কম ছিল। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও কিছু মোটারসাইকেলে, প্রাইভেটকার, ট্রাক, লরি ও পিকআপ ভ্যানে যাত্রী হয়ে ঢাকায় আসছেন। বেশকিছু মোটরসাইকেলে ঝুঁকি নিয়ে মালামালসহ দুজন যাত্রী চলাচল করতে দেখা গেছে।
ঢাকাগামী যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ১৬০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা, লক্ষ্মীপুরের হায়দারগঞ্জ ১৩০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা, কুমিল্লায় ৭০০ টাকা থেকে ১০০০ ভাড়া নিয়েছেন প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস চালকরা।
চাঁদপুর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন বদিউল আলম। তিনি বলেন, চাঁদপুর থেকে ঢাকায় আসার জন্য একটি প্রাইভেটকার রিজার্ভ করেছি। চার সিটের এ প্রাইভেটকারটি ৮৫০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা আসার পথে প্রাইভেটকারটি দুইবার নষ্ট হয়। ফিটনেসবিহীন এসব প্রাইভেটকারগুলো দ্রুত চলাচল বন্ধের দাবি জানান তিনি।
চট্টগ্রামে পরিবারের সাথে ঈদ করে ঢাকায় ফিরলেন একটি ইন্টারনেট কোম্পানিতে কর্মরত আবুল কালাম। তিনি বলেন, রোববার থেকে অফিস খোলা। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় চলে এসেছি। প্রাইভেটকারে ভাড়া অনেক বেশি। অন্যান্য সময় বাসে চট্টগ্রাম ৪০০-৫০০ টাকায় এখন প্রাইভেটকারে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ২০০০ টাকা দিয়ে এসেছি।
আরেক যাত্রী বোরহান মিয়া বলেন, লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকায় জনপ্রতি ভাড়া ১৭০০টাকা দিয়েও গাদাগাদি করে আসছি। আগে বাস চালকদের কাছে, এখন প্রাইভেটকার চালকদের কাছে আমরা জিম্মি। বাড়ি যেতে এবং ঢাকায় আসতে প্রাইভেটকারে জন প্রতি ৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
সায়েদাবাদে কথা হয় রবিউল হকের সাথে। তিনি বলেন, ঢাকায় রং মিস্ত্রির কাজ করি। ঈদের তিন দিন আগে বাড়ি গিয়েছিলাম আজ ঢাকায় ফিরলাম। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার থেকে খোলা ট্রাকে ৬০০ টাকা দিয়ে ঢাকায় এসেছি।
কুমিল্লার দাউদকান্দির বাসিন্দা মোতাহার হোসেন বলেন, জরুরি কাজে ঢাকায় এসেছি। ২০০ টাকার ভাড়া ৬০০ টাকা করে দিয়ে ঢাকায় এসেছি। তাও এক বাইকে দুই যাত্রী।
নয়ন নামের মাইক্রোবাস চালক বলেন, ঈদের তিন দিন সড়কে প্রাইভেটকার চালাতে চাঁদা দিতে হয়। প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ধরলে পুলিশ মামলা দেয়। এ কারণে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিতে নিচ্ছি। যাত্রীদের কাছ থেকে যে ভাড়া নেই তার অর্ধেক পরিবহন নেতাসহ অনেককেই দিতে হয়।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দায়িত্বরত যাত্রাবাড়ী থানার এএসআই আর বলেন, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের বিষয়ে সরকারি বিধি-নিষেধ না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। বাস বন্ধ থাকায় তারা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেছেন এবং দুই চালকের নামে মামলা দিয়েছি।
আসাদ/সাইফ
আরো পড়ুন