ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

উত্তরার ল্যাবে তৈরি হচ্ছে ভয়ঙ্কর মাদক ‘আইস’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ১৮ জুন ২০২১   আপডেট: ২১:৫৮, ১৮ জুন ২০২১
উত্তরার ল্যাবে তৈরি হচ্ছে ভয়ঙ্কর মাদক ‘আইস’

রাজধানীর উত্তরায় গোপনে গড়ে তোলা হয়েছে ভয়ঙ্কর মাদক ‘আইস’ তৈরির ল্যাবরেটরি। এ ল্যাবে বিভিন্ন ওষুধ, রাসায়নিক, রং ও মাদকের সংমিশ্রণে আইস তৈরি করা হতো। মাদক তৈরি সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা তৌফিকসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানতে পেরেছে র‌্যাব।

শুক্রবার (১৮ জুন) বিকেলে কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার মঈন আলী এসব তথ‌্য জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে উত্তরা থেকে মো. তৌফিক হোসাইন, মো. জামিরুল চৌধুরী ওরফে জুবেইন, মো. আরাফাত আবেদীন ওরফে রুদ্র, মো. রাকিব বাসার খান, মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে সবুজ, মো. খালেদ ইকবালকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩ এর আভিযানিক দল। এ সময় আইস, ইয়াবা, বিদেশি মদ, গাঁজা এবং ১৩টি বিদেশি অস্ত্র, অস্ত্রের রেপ্লিকা, ইলেকট্রিক শক দেওয়ার যন্ত্র, মাদক তৈরি ও সেবনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

খন্দকার মঈন আলী জানান, গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়, একটি চক্র ‘মেথ ল্যাব’ তৈরি করে ভেজাল আইস, ইয়াবার রং পরিবর্তন, ঝাক্কি মিক্স, ঝাক্কি, ককটেল মাদক তৈরি করছে। র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। উত্তরায় একটি ‘মেথ ল্যাব’ এর সন্ধান মেলে। এ ল্যাবটি চালাতো আরাফাত রুদ্র ওরফে ঝাক্কি রুদ্র ও তার কয়েকজন সহযোগী। তারা আইস  ও ইয়াবার ওপর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতো। বাজার থেকে বিভিন্ন ওষুধ ও রাসায়নিক সংগ্রহ করে মাদকের সঙ্গে মেশাতো। ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে আইসের পরিমাণ বৃদ্ধি, ইয়াবার রং পরিবর্তন এবং ‘ঝাক্কি’ তৈরি করত। ‘ঝাক্কি’ তৈরিতে তারা তরল পানীর সঙ্গে ইয়াবা, ঘুমের ওষুধ ও অন্যান্য নেশাজাতীয় ওষুধ মেশাতো। ভেজাল ও পরিশুদ্ধ—উভয় প্রকার আইস সরবরাহ করতো তারা। নিজেরাও তা সেবন করতো। এছাড়া, মাদক দ্রব্য সেবনের জন্য তারা উত্তরায় বায়িং হাউজের নামে বাসা ভাড়া করে গোপনে মাদক সেবন ও অন‌্যান‌্য কার্যক্রম চালাতো। সেখানে মাদক সেবনকারী সিন্ডিকেটের একই ‘রিং’ পরিহিত সদস‌্য বা পরিচিতরা আসা-যাওয়া করতো। তারা অনলাইনে বিভিন্ন কনটেন্ট থেকে মেথ ল্যাব সম্পর্কে জানতে পারে।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, এই মাদক তৈরি ও ব্যবসার সমন্বয়কারী তৌফিক। অর্থ যোগানদাতা জুবেইন ও খালেদ। রুদ্র রসায়নবিদ হিসেবে ‘মেথ ল্যাব’ চালাতো। সবুজ মাদক সংগ্রহ ও সরবরাহকারী। তৌফিকসহ বাকিরা মাদক বিপণনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই চক্রে আরও ১০-১৫ জন আছে।

জুবেইন লন্ডন হতে বিবিএ, তৌফিক ও খালেদ বেসরকারি বিশ্ববিদ‌্যালয় থেকে বিবিএ পাস করেছেন এবং রুদ্র ও সাইফুল এইচএসসি পাস করেছে। রুদ্রের বিরুদ্ধে তিনটি মাদক মামলা আছে এবং জুবেইনের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা আছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিনিয়ত ইয়াবা সেবনের ফলে তারা চরম মাদকাসক্ত। চার-পাঁচ বছর ধরে তারা আইস সেবন করছে। তারা তরুণ-তরুণীদের মাদক সেবনে উদ্বুদ্ধ করতো। গোপন ভিডিও ধারণ করে তাদের ব্ল‌্যাকমেইল করতো।

ঢাকা/মাকসুদ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়