ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘আম্মা অসুস্থ তাই বাড়ি যেতেই হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ২৫ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৭:৫১, ২৫ জুলাই ২০২১
‘আম্মা অসুস্থ তাই বাড়ি যেতেই হবে’

মোটরসাইকেলে গ্রামে যাচ্ছেন অনেকেই। ছবিটি আমিনবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তোলা। ছবি: হাসিবুল মিথুন

‘আম্মা অসুস্থ। তাই যেভাবেই পারি আমাকে বাড়ি যেতেই হবে। জানিনা এইভাবে মোটরসাইকেল, রিকশা কইরা কতদূর পর্যন্ত যেতে পারবো। কিন্তু যত বাধাই আসুক বাড়ি যেতেই হবে। ’ এমন কথা বলছিলেন খুলনাগামী যাত্রী আসমা বেগম। 

রোববার (২৫ জুলাই) রাজধানীর আমিনবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় মোটরসাইকেল ভাড়া করে আরিচা ঘাট যাওয়ার সময় এ কথা বলেন আসমা বেগম। 

আসমা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গতকাল রাতে আমার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন জানিনা কি অবস্থা। বাসার সবাই বলছে একটু ভালো আছেন তিনি।  কিন্তু ভাই আমি তো তার মেয়ে।  মাকে না দেখা পর্যন্ত আমার মন ভরবে না।  লকডাউন যাই হোক না কেন আমি বাড়ি যাবই’। 

কীভাবে যাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মোহাম্মদপুর থেকে আমিনবাজার এসেছি প্রায় ১৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে। আমি আর আমার স্বামী এখন একটা মোটরসাইকেল ভাড়া করে আরিচা পর্যন্ত যাবো’। 

তিনি বলেন, লকডাউনের মধ্যে আমি বিপদে পড়েছি। কিন্তু কেউ আমাকে সাহায্য করছে না।  আমার স্বামী ছোট একটা কোম্পানিতে চাকরি করে।  গত কয়েক মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না ও।  এখন বাড়ি যাবো বলে এক আপার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করে নিয়ে এসেছি। কিন্তু মোটরসাইকেলে আরিচা পর্যন্ত চাচ্ছে জনপ্রতি ১০০০ টাকা করে।  বললাম একটু কম নিতে, কিন্তু কম নিলোনা।  চিন্তা করেন মানুষ বিপদে পরলে সবাই সুযোগ নেয়। 

এদিকে, রাজধানীর আমিনবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাবতলী এলাকায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে রিকশা করে মানুষ আসছে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও তারা অনিশ্চিত যাত্রা করছেন। 

কথা হয় মোহাম্মদ আবুদুল হাইয়ের সঙ্গে।  তিনি বলেন, আমি পান সিগারেটের ব্যবসা করি।  করোনার কারণে গত বছর থেকেই বন্ধ থাকে আবার মাঝে মধ্যে খুলতে পারি।  তাই হাতে টাকা পয়সা একদমই নেই।  ঢাকায় থাকার মতো অবস্থায় আমি এখন আর নেই।  তাই বাড়ি যাচ্ছি।  ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি অসুস্থ ছিলাম।  এখন একটু সুস্থ তাই বাড়ি যাচ্ছি।  জানিনা বাড়ি গিয়ে কী করবো।  কিন্তু ঢাকা থেকে কোনো লাভ নেই। তাই চলে যাচ্ছি। 

কথা হয় গাবতলী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোহাম্মদ হাসনাত হোসেনের সঙ্গে।  তিনি বলেন, করোনার কারণে এখন গণপরিবহন বন্ধ।  কিন্তু প্রতিদিনই এই এলাকায় মানুষ এসে জড়ো হচ্ছেন গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য।  আমরা খুব সতর্ক রয়েছি।  সরকারের নির্দেশনা কাউকেই অমান্য করতে দিচ্ছি না।  যারা আসছেন তাদের আবার ফেরত পাঠাচ্ছি।  তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানবিক দিক বিবেচনা করে কিছু কিছু মানুষকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে।  তবে আমরা চেষ্টা করছি অকারণে কেউ যেন বের না হন। 

/হাসিবুল/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়