ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সিটি করপোরেশনের স্টিকারযুক্ত গাড়িতে যাত্রী পরিবহন

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১১, ৫ আগস্ট ২০২১  
সিটি করপোরেশনের স্টিকারযুক্ত গাড়িতে যাত্রী পরিবহন

ছবি: রাইজিংবিডি

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশব‌্যাপী চলছে কঠোর লকডাউন। লকডাউনের কারণে দেশের গণপরিবহন বন্ধ থাকায় প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন উপায়ে রাজধানী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন নিজ নিজ জেলায়। কেউ প্রাইভেটকার, কেউ মোটরসাইকেল কেউ বা ট্রাক-পিকআপে চড়ে রাজধানী ছাড়ছেন। 

এই লকডাউনের মধ্যে গাবতলীর আমিনবাজার ব্রিজের ওপর থেকে থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্টিকার যুক্ত গাড়িতে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। 

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর গাবতলী আমিনবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্টিকার সংবলিত ঢাকা মেট্রো ঠ-১১-০৩৩৮  নম্বর প্লেট লাগানো একটি প্রাইভেটকারের চালক কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে দর কষাকষি করছেন।  তবে, এই প্রতিবেদক যখন ওই গাড়ি ও যাত্রীদের ভিডিওচিত্র ধারণ করছিলেন, তখন মাঝপথে যাত্রী তোলা বন্ধ করেই গাড়ি নিয়ে দ্রুত চলে যান চালক। 

সেখানে কয়েকজন যাত্রী ও দালালের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের স্টিকার সংবলিত গাড়িটি যাত্রীদের নিয়ে পাটুরিয়া উদ্দেশে  গেছে।  তবে তারা বলেন, এই গাড়ি আদৌ সিটি করপোরেশনের কিনা সেটা তারা  জানেন না।  

এ বিষয়ে আমিনবাজার এলাকায় পরিবহন শ্রমিক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একটি পরিবহনে হেলপার হিসেবে কাজ করি। পরিবহন চলে না।  তাই কোনো কাজ নেই, ইনকামও নেই।  পরিবহন না চললে মালিক আমাদের কোনো টাকা পয়সা দেন না।  তাই গাবতলী এলাকায় এসে প্রতিদিন কিছু যাত্রী প্রাইভেটকারে তুলে দেই, যার বিনিময়ে দৈনিক ১০০ থেকে ২০০ টাকা পাই।  করোনার সময় এই টাকা দিয়েই মূলত পেট চালাচ্ছি।’ 

সিটি করপোরেশনের গাড়িতে যাত্রী পরিবহন করার বিষয়ে তিনি বলেন,  ‘গণপরিবহন না চলার কারণে অনেক মানুষ এখন বিভিন্ন উপায়ে যাত্রা করছেন।  কেউ বাইকে করে যাচ্ছেন।  কেউ প্রাইভেটকারে করে যাচ্ছেন। সবাই আসলে জরুরি প্রয়োজনেই ঢাকা ছাড়ছেন। আর সিটি করপোরেশনের গাড়ি কিনা যানি না। হঠাৎ করে দেখি ওই গাড়িটা ব্রিজের উপরে এসে দাঁড়িয়েছে যাত্রী নেওয়ার জন্য।  তাই আমরা যাত্রী তুলে দিচ্ছি। এখান থেকে পাটুরিয়া ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা। একজন যাত্রী তুলে দিলে ১০০ টাকার মতো পাই আমরা।  তাই কে কোন গাড়িতে যাত্রী নিলো সেটা আসলে আমরা দেখি না। ’

তিনি বলেন, ‘অনেকেই এখানে এসে এসব ভিডিও করে বা ছবি তুলে সেগুলো পোস্ট করে ফেসবুকে।  যাই হোক না কেন, সব দোষ আমাদেরই হয়।  আমাদের তো খেতে হবে।  বেঁচে থাকতে হবে। কেউ তো আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায় না।’ 

এ বিষয়ে আমিনবাজার এলাকায় পুলিশ সার্জেন্ট এহসান হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে কেউ যাত্রী পরিবহন করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব‌্যবস্থা নিচ্ছি।  আমাদের চোখে পড়লে কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। 

সিটি করপোরেশনের গাড়িতে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে অনেক যাত্রী আসছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য। তাদের অনেকেই জরুরি কারণ দেখাচ্ছে। আর সিটি করপোরেশনের গাড়িতে যদি কেউ যাত্রী পরিবহন করে তাহলে আসলে আমরা কি করতে পারি বলেন। কয়জনকে আটকাবো। তারপরেও চেষ্টা করছি মানুষ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করে সে বিষয়ে। 

/হাসিবুল/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়