গণটিকার লক্ষ্যমাত্রা ৩২ লাখ, দেওয়া হয়েছে ৩০ লাখ
করোনা সংক্রমণে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তার নিয়ন্ত্রণে ৭ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রাজধানী থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত গণটিকা কর্মসূচির মাধ্যমে ছয় দিনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই লক্ষ্য অবশ্য পুরোপুরি অর্জন হয়নি। এই গণটিকা কার্যক্রমে ৬ দিনে ৩০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
গণটিকা কার্যক্রম শুরুর আগের দিন ৬ আগস্ট মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের সভাকক্ষে টিকা কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে টিকাদানের পরিসর বাড়ানোর অংশ হিসেবে ৭ থেকে ১২ আগস্ট ৬ দিনে সারাদেশের ১৫ হাজারের বেশি টিকাদান কেন্দ্রে ৩২ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে।’
কিন্তু গণটিকা কার্যক্রম যথাসময়ে শুরু হলেও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা টিকা সময়মতো না পাওয়ায় টিকা কার্যক্রমের গতি ব্যাহত হয় বলে জানান স্বাস্থ্য ডিজি।
তারপরও সেই সঙ্কট সামলে গত ৬ দিনে দেশে ৩০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রথমদিকে এই গণটিকা কার্যক্রম বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ৬ দিনে প্রায় এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যের কথা বললেও শেষ মুহূর্তে তা কমিয়ে আনা হয়।
৬ দিনের গণটিকা দেওয়া হয়েছে যেভাবে:
৭ আগস্ট: দেশের সব ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনে টিকা কার্যক্রম শুরু।
৮ ও ৯ আগস্ট: ইউনিয়নের যেসব ওয়ার্ডে ৭ তারিখ নিয়মিত টিকাদান চালু ছিল, সেসব ওয়ার্ডে এবং পৌরসভার বাদ পড়া ওয়ার্ডে টিকা দেওয়া।
৭ থেকে ৯ আগস্ট: সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকা কার্যক্রম চালু।
৮ ও ৯ আগস্ট: দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় টিকাদান।
১০ থেকে ১২ আগস্ট: ৫৫ বছরের বেশি বয়সী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মাঝে টিকাদান কার্যক্রম।
সারা দেশে ৪,৬০০টি ইউনিয়ন, ১,০৫৪টি পৌরসভা, সিটি করপোশেন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে চলেছে এই গণটিকা কার্যক্রম।
১৫ হাজারেরও বেশি টিকাদান কেন্দ্রে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকারী এবং ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবী এই কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা এ প্রসঙ্গে বলেন, `সরকারের কেনা, উপহার পাওয়া এবং কোভ্যাক্সের মাধ্যমে পাওয়া; সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকা দেশে এসেছে ২ কোটি ৫৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯২০ ডোজ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু ঠেকাতে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ১৪ কোটি নাগরিককে সরকারের তরফ থেকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান নাসিমা সুলতানা।
তথ্য জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত সব ধরণের টিকা মিলিয়ে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৫০ লাখ ২৩ হাজার ১৬২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৫০ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪৫ জন। প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছেন পুরুষ ৮৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৩০ আর নারী ৬২ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩২ জন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিয়েছেন পুরুষ ৩১ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৫ আর নারী ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ৫০ জন।
ঢাকা/মেসবাহ/এমএম
আরো পড়ুন