ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বনানীর এমিকন ভবনে এটি আগুনের পঞ্চম ঘটনা

মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২১ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৭:১৪, ২১ আগস্ট ২০২১
বনানীর এমিকন ভবনে এটি আগুনের পঞ্চম ঘটনা

'হঠাৎ করে প্লস্টিক পোড়া গন্ধ নাকে আসে। আমরা কয়েকজন শ্রমিক তখন তিনতলায় গোডাউনের এক অংশে বসে কাজ করছিলাম। বুঝতে পারি গোডাউনে আগুন লেগেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসে ফোন করে খবর দেই।'

এভাবেই শনিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৯টায় বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার আনন্দ টিভির পাশের ছয়তলা এমিকন ভবনের তিনতলায় অগ্নিকাণ্ডে বর্ণনা দিচ্ছিলেন এমিকনে কাজ করা দুলাল মিয়া। ২২ বছর ধরে এমিকনে কাজ করছেন তিনি।

সকাল ৯টার দিকে আগুন টের পেয়ে ফোন করলে ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিট একে একে আসতে থাকে। সর্বশেষ বেলা দেড়টা পর্যন্ত সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ১৫ টি ইউনিট কাজ করছিল।

আগুন লাগা ভবনটি চেয়ারবাড়ি এলাকায় ঢাকা ময়মনসিংহ রোডের ওপর হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলোর দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পৌছাতে সমস্যা হয়নি। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে তাদের রিজার্ভ পানি শেষ হয়ে গেলে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়। পরবর্তী সময়ে বনানী ২ নম্বর রোডের আবাসিক এলাকার একটি পুকুর থেকে পানির ব্যবস্থা করা হয়।

অগ্নিকাণ্ডকবলিত ভবনের ৫টি জানালা দিয়ে অনবরত ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। একে একে সব জানালা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি থেকে ভেতরে পানি ছিটানো হলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চার ঘন্টারও বেশি সময় লেগে যায়।

ওই ভবনে আগুন লাগার পর পরই প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাজার হাজার গাড়ি রাস্তাতেই স্থির হয়ে যায়। সাত রাস্তা থেকে বনানী, বিজয় সরণি থেকে মহাখালি ফ্লাইওভার হয়ে বনানী, এয়ারপোর্ট থেকে কাকলি পর্যন্ত কয়েক হাজার গাড়ি রাস্তায় আটকে যায়।

দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এমিকনে কাজ করা দুলাল মিয়া জানান, এমিকনের কারখানা এবং গোডাউনে আগুনের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। আঙ্গুলের কড়ে গুনে দুলাল মিয়া বললেন, এ নিয়ে এখানে এটি পাঁচবারের মতো আগুন লাগলো। ২ বারের আগুন ছিল ভয়াবহ। বাকী ৩ বার মোটামুটি অল্পের ওপর দিয়ে গেছে।

‘কেনো বার বার এখানে আগুন লাগছে? জানতে চাইলে এমিকনের এক পরিচালক আসিফ ইকবাল বলেন, 'আমাদের গোডাউনে বিভিন্ন কোম্পানিতে সরবরাহ করার জন্য তৈরি, আধা তৈরি বিভিন্ন রকমের ক্রেস্টসহ উপহার সামগ্রী রয়েছে। যার বেশির ভাগই কাঠ ও প্ল­াস্টিকের তৈরি। এছাড়াও গোডাউনে বিদেশ থেকে আমদানি করে আনা বিভিন্ন মেটেরিয়্যাল ও কেমিক্যাল রয়েছে। এসব দিয়েই আমরা ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী বানাই। এসব খুবই দাহ্য পদার্থ। সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। গোডাউনে প্রায় ৫-৬০ লাখ টাকার মালামাল ছিল।'

এদিকে বেলা সারে বারোটার দিকে আগুন লাগা এলাকা পরিদর্শনে আসেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। পরিদর্শন শেষে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমাদের প্রথম কাজ আগুন নিয়ন্ত্রেণে আনা। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট কাজ করেছে। ফায়ার সার্ভিসের রেসকিউ ইউনিট ভবনের তিন তলায় ঢুকে দেখবে কেউ ভেতরে আটকা আছে কি না? থাকলে তাকে উদ্ধার করবে।'

ভবনের ৫টি জানালার মধ্যে একটি জানালা দিয়ে ভেতর থেকে হালকা ধোঁয়া বের হতে দেখা গেলেও আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে এসেছে দুপুর দুটোর কিছু পরে।

ঢাকা/মেয়া/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়