ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ডেঙ্গু: রাজধানীতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গোড়ান ও বাসাবো

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ২২ আগস্ট ২০২১  
ডেঙ্গু: রাজধানীতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গোড়ান ও বাসাবো

সারা দেশের ডেঙ্গুকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে জরিপ চালিয়ে এডিস মশার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে রাজধানীর গোড়ান ও বাসাবোতে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গত ২৯ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিন ধরে এ জরিপ করা হয়।

রোববার (২২ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলন করে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপ-ব্যবস্থাপক ডা. আফসানা আলমগীর খান।

জ‌রি‌পে দেখা গেছে, ঢাকার উত্তর ও দ‌ক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডের ১৯টি এলাকায় মশার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ এর বেশি পাওয়া গেছে। দুই সিটি করপোরেশনের ৫৬টি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ২০ বা তার বেশি।

ব্রুটো ইনডেক্স
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এলিফ্যান্ট রোড ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ৬৬ দশমিক ৭, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরকে মিশন রোড ও টিকাটুলিতে ৫০, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বনশ্রীতে ৪০ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিন্টো রোড ও বেইলি রোডে ৪০।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ৫৬ দশমিক ৭ পাওয়া গেছে। এই ওয়ার্ডে আছে মগবাজার ও নিউ ইস্কাটন এলাকা।

এছাড়া, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও নিকুঞ্জ নিয়ে গড়া ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রুটো ইনডেক্স ৪৮ দশমিক ৪, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর ও দারুস সালাম এলাকায় ৪৬ দশমিক ৭, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়ায় ৪৩ দশমিক ৩ এবং মহাখালী ও নিকেতন এলাকা নিয়ে ডিএনসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০।

উত্তর সিটি করপোরেশনের আফতাবনগর ও মেরুল বাড্ডা এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বংশালের ব্রুটো ইনডেক্স শূন্য পাওয়া গেছে জরিপে। অর্থাৎ এসব এলাকায় মশার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থানে জরিপ চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরের ৪১টি এবং দক্ষিণের ৫৯টি।

জরিপের সময় এসব এলাকার ৩ হাজার বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। ২ হাজার ৪১২টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশা পাওয়া যায়নি। ৫৮৮টি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ মোট পরিদর্শন করা বাড়ির ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর মশার উপস্থিতি বেশি। এ বছর ডিএসসিসির ৩০টি এবং ডিএনসিসির ২৬টি এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি পাওয়া গেছে।

অন্য‌দি‌কে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে জানা গে‌ছে, রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ২৫৯ জন এবং ঢাকা মহানগরীর বাইরে ৩২ জন রোগী ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করায় ১ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। পরের বছর ২০২০ সা‌লে তা অনেকটা কমে আসে। ওই বছর হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল।

করোনা মহামারির মধ্যে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বি‌শেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য অ‌ধিদপ্ত‌রের হিসাব ম‌তে, বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি আছেন ১ হাজার ২১৮ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের ১ হাজার ১৩১ জনই ঢাকা মহানগরীর। অন্যান্য জেলায় বর্তমানে ৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মেসবাহ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়