ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রাজধানীতে স্কুল খোলার আগের রাতে শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১  
রাজধানীতে স্কুল খোলার আগের রাতে শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

সারাদেশে একযোগে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় রোববার (১২ সেপ্টেম্বর)  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পেরে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের ঢল নামে। তবে এই আনন্দ স্নান হয়ে গেছে শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আবির হোসেন খানের (১৮) পরিবারে।

আগের রাতে সে গলায় গামছা পেঁচিয়ে স্কুলের ছাত্রাবাসে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মো. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস রাইজিংবিডিকে বলেন, আবিরের বাবা ফজলুর রহমান খান বাদি হয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।  প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা হিসেবেই সন্দেহ করা হচ্ছে।  মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল  কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

জানা গেছে, আবির হোসেন এবার শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন। দীর্ঘদিন পরিবারের সঙ্গে থাকার পর শনিবার দুপুরে তার বাবা তাকে স্কুলের ছাত্রাবাসে দিয়ে যান। আবির কোনভাবেই ছাত্রাবাসে থাকতে চাচ্ছিলেন না।  পরে তার বাবা অনেক বুঝিয়ে তাকে রেখে যান। কিন্তু আবিরের মন মানছিল না।  এরই মধ্যে সে ওই ছাত্রাবাসের বুয়ার কাছে গেম খেলার জন্য একটি মোবাইল চান। কিন্তু বুয়া মোবাইল দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আবির বলেন মোবাইল যেহেতু দিলেন না তাহলে ফোন করে বাবাকে লাশ নিয়ে যেতে বলেন।  এরপরই মূলত আবির তার কক্ষে চলে যায়, গলায় গামছা পেচিয়ে জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।  আবিরের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে বুয়া স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা এসে ৭ তলা ভবনে আবিরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

পুলিশ ও আবিরের স্বজনদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, আবির মোবাইলে গেম খেলায় আসক্ত ছিলেন। দীর্ঘদিন বাসায় থাকার কারণে সে মোবাইলে সার্বক্ষণিক গেম খেলতেন। আসার আগে তার বাবা-মা মোবাইলটি রেখে দেন।

জানা গেছে, অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো এদিন উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো স্কুল প্রাঙ্গণ। আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে শিক্ষার্থীরা। তবে  আবিরের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছিল না তার সহপাঠীরা।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার হোসেন নগর গ্রামের ফজলুর রহমান খান ও আবেদা সুলতানা খান দম্পতির একমাত্র সন্তান আবির। পরিবারটি বর্তমানে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার আমতলী এলাকায় থাকেন। 

মা আবিদা সুলতানা রাইজিংবিডিকে বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। একমাত্র সন্তান এভাবে চলে যাবে আগে জানলে হোস্টেলে পাঠাতাম না। আর এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে আবির আত্মহত্যা করতে পারে।  এর সঙ্গে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। যা তদন্ত করে বের করা দরকার। 

এদিকে, রোববার দুপুরে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক)। সেখানে তার গলায় কালো দাগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

/মাকসুদ/এসবি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়