ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি’

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০২, ২১ অক্টোবর ২০২১  
করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি’

করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সরকারি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি’ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে মন্ত্রণালয়টি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনাকালে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। এসব মানুষেরা বেশির ভাগই স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত। এদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, নিম্ন আয় এবং কর্মহীন মানুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০০৮ সাল থেকে ‘এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম ফর পোরেস্ট (ইজিপিপি) কর্মসূচির প্রচলন করে। ওই কর্মসূচির আলোকেই করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। তবে এই নীতিমালায় কিছু সংশোধন করা হবে। সীমিত উপজেলার পরিবর্তে দেশের সব উপজেলায় মজুরি শ্রমিক এবং খণ্ডকালীন নির্মাণ শ্রমিকদের উপকারের জন্য।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ফসল তোলার আগে বছরে দুবার, শস্য উৎপাদন সামলাতে কম শ্রমিকের প্রয়োজন হয় এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব দেখা দেয়। এই সময়ে, হাজার হাজার দিনমজুরদের সামান্য কাজের ওপর বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে এবং মৌসুমী ক্ষুধার শিকার হন। এদের সুরক্ষার জন্য ২০০৮ সালে কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি চালু করা হয়, যার সুবিধাভোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখের বেশি দরিদ্র জনগোষ্ঠী।  যা একটি নিরাপদ এবং নিয়মিত আয়ের উৎস।  এদের মধ্যে ৩৩ শতাংশের এর বেশি নারী। এই কর্মসূচির আওতা বাড়াতে নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগে একটি উপজেলা ইজিপিপির জন্য যোগ্যতা অর্জন করত, যদি তার ৩০ শতাংশ হার্ডকোর দরিদ্র থাকে। এখন এটি দেশব্যাপী সম্প্রসারিত হবে।

ইজিপিপির প্রকল্প পরিচালক সেলিম আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। এখন করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে। মানুষের মুভমেন্টও বেড়েছে।  কর্মসূচি খুব শিগগির শুরু হবে আশা করছি। করোনার কারণে বিপুলসংখ্যক গ্রামীণ মানুষ তাদের চাকরি বা আয় হারিয়েছে।  অতএব, জনগণের উন্নতির জন্য এই কর্মসূচিকে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, ৬৪টি জেলার ৪৯২টি উপজেলায় ইজিপিপি বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বিভাগ প্রথম মাসে এবং অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে প্রয়োজনীয় তহবিল ছাড় করবে। বর্তমানে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২১৬টি উপজেলায় ইজিপিপি পরিচালনা করে যেখানে অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠী জনসংখ্যার ৩০ শতাংশেরও বেশি।

এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসীন বলেন, কর্মসূচি দেশব্যাপী চালু করতে আমাদের অতিরিক্ত ৯০০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এ বিষয়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। 

তিনি বলেন, আমরা জানি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কমে গছে।  সুতরাং সরকার অতি দরিদ্রদের আর্থিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে এ উদ্যোগ নিয়েছে। আর সরকারের জন্য দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির কর্মসূচির বিস্তার ঘটানোর এটাই উপযুক্ত সময়।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, তৃণমূলের খাতগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত।

২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ২১৬ টি উপজেলায় ১৯ কোটি ১৮ লাখ উপকারভোগীর জন্য মোট ১,৬৫০ কোটি টাকা ইজিপিপি এর জন্য বরাদ্দ করেছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোট উপকারভোগী ছিল মাত্র ৬ লাখ ৬৮ হাজার মানুষ।

হাসনাত/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়