ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ডিএনসিসি ব্যবসা করবে না, সেবা দেবে: মেয়র আতিক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ১৮ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৮:০৬, ১৮ নভেম্বর ২০২১
ডিএনসিসি ব্যবসা করবে না, সেবা দেবে: মেয়র আতিক

বিশ্ব টয়লেট দিবস উপলক্ষে গোলটেবিল বৈঠক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘অন্য অনেক নাগরিক সুবিধার পাশাপাশি পাবলিক টয়লেট সুবিধাও নাগরিকদের অধিকার। আমরা সে ব্যাপারে চেষ্টা করছি। আরও অনেক পাবলিক টয়লেট বানাবে ডিএনসিসি। সেগুলো টাকা দিয়েই ব্যবহার করতে হবে নাগরিকদের। তবে, ডিএনসিসি এ থেকে ব্যবসা করবে না, সেবা দেবে মানুষকে।’

১৯ নভেম্বর বিশ্ব টয়লেট দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।

বৈঠকে আলোচকরা বলেন, ‘২ কোটি মানুষের শহরে পাবলিক টয়লেট মাত্র ৭২টি। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪০টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩২টি। নাগরিক সুবিধার অংশ হিসেবে রাজধানীতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পাবলিক টয়লেট বানানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘রাজধানী শহরে অফিসগামী এবং ভ্রাম্যমাণ মানুষ, বিশেষ করে নারীদের কথা বিবেচনায় রেখে প্রচুর পরিমাণে পাবলিক টয়লেট বানাতে হবে। এ দায়িত্ব নিতে হবে দুই সিটি করপোরেশনকে। টয়লেট বানানোর পাশাপাশি মানুষের সুবিধার জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি ও ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনও করা যেতে পারে। এসব সার্ভিস টাকার বিনিময়ে মানুষ উপভোগ করবে।’

ভূমিজ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা রশীদ বলেন, ‘গাবতলী বাস টার্মিনালে যেরকম চমৎকার পাবলিক টয়লেট বানানো হয়েছে, সেরকম ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বানাতে হবে। কেবল বানালেই হবে না, এসব টয়লেট সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে।’

ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তারিক বিন ইউসুফ বলেন, ‘রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে ২০১১ সালে পাবলিক টয়লেট বানানো হয়েছে। সেটা লাখো মানুষ ব্যবহার করছেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও করা হচ্ছে নিয়মিত। পুরো রাজধানীতে পাবলিক টয়লেট আছে মাত্র ৭২টি। কমপক্ষে ৫০০ পাবলিক টয়লেট প্রয়োজন।’

ইউনিলিভারের মার্কেটিং ডিরেক্টর তানজীন ফেরদৌস বলেন, ‘রাজধানীতে পৌনে ৩ লাখ মানুষের জন্য আছে একটি করে পাবলিক টয়লেট। কর্মজীবী মানুষ, বিশেষ করে নারীদের জন্য প্রচুর পরিমাণে পাবলিক টয়লেট বানানো জরুরি।’

রাজধানীতে পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি সারা দেশে প্রতিটি ফিলিং স্টেশনে অন্তত দুটি করে পাবলিক টয়লেট বানানোর ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ জানান এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার অমিত দত্ত রয়। তিনি ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নেন।

পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারত্ব বাড়িয়ে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরে মানসম্মত পাবলিক টয়লেট বানানোর অনুরোধ জানান ইউনিলিভারের ডিরেক্টর (মার্কেটিং) সাদমান সাদিকিন। তিনি বলেন, ‘পাবলিক টয়লেট বানানোর ক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের কথাও বিশেষভাবে মাথায় রাখতে হবে। নারীরা যাতে এসব টয়লেট নিরাপদে ব্যবহার করতে পারে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গুলশান, বনানী লেক এবং হাতিরঝিলে আমরা মাছ চাষ করতে চেয়েছিলাম। পানি পরীক্ষায় দেখা গেছে, এসব লেক ও ঝিলের পানি বাসা-বাড়ির স্যুয়ারেজ লাইনের ময়লায় নষ্ট হয়ে গেছে। এসব লাইন বন্ধ করার জন্য আমরা সব বাড়ির মালিককে চিঠি দিয়েছি।’

মেয়র বলেন, ‘১ কোটি টাকার ফ্ল্যাটে থাকছেন, অথচ সে বাসার ময়লা-আবর্জনা সব লেকে আর ঝিলের পানিতে ফেলবেন, পানি দূষিত করবেন, এটা হতে পারে না। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিজেদের স্যুয়ারেজ লাইন ও সেফটিক ট্যাংক করার জন্য তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজধানীতে আরও কিছু পাবলিক টয়লেট করার প্ল্যান আছে আমাদের। জায়গা পেলেই কাজ শুরু করা হবে। আরও অন্তত ৩৫টি টয়লেট বানানোর ফান্ড এখনও আমাদের হাতে আছে। সব ডেভেলপার কোম্পানি তাদের প্রজেক্টে অবশ্যই খেলার মাঠ, মসজিদ, পাবলিক টয়লেটের জায়গা না রাখলে যেন অনুমতি না দেওয়া হয়, সেজন্য রাজউককে ডিএনসিসির তরফ থেকে অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সবাই মিলে নগরকে ভালোবাসতে হবে। পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। এ শহর আমাদের, এ শহরকে বাসযোগ্য রাখাও আমাদের সবার দায়িত্ব।’

মেসবাহ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়