খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের আমলে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জিত হয়েছে। সরকার এখন সব মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে। কিন্তু ক্রমহ্রাসমান চাষযোগ্য জমি এবং এর বিপরীতে ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠী ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

রোববার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত সেমিনার, শোকেসিং, সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড ও মৃত্তিকা দিবস পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতি এবং প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশ এ অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করে। এ বছর বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসের প্রতিপাদ্য—লবণাক্ততা রোধ করি, মাটির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে লবণাক্ততা বড় সমস্যা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ত জমির পরিমাণ আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে। এ অবস্থায় খাদ্য উৎপাদন স্থিতিশীল ও টেকসই রাখতে হলে উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে চাষযোগ্য জাত এবং উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ছড়িয়ে দিতে হবে। সেজন্য আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি। ইতোমধ্যে আমাদের কৃষিবিজ্ঞানীরা অনেক ফসলের লবণাক্ততাসহিষ্ণু উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। এসব জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি চাষিদের মধ্যে দ্রুত সম্প্রসারণের কাজ চলছে।’

পরে কৃষিমন্ত্রী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট প্রকাশিত ‘সয়েল অ্যাটলাস অব বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রায় ২৫ শতাংশ এলাকাই উপকূলীয়। উপকূলীয় ৯৩ উপজেলার ১০ লাখ হেক্টরের বেশি জমি বিভিন্ন মাত্রায় লবণাক্ততায় আক্রান্ত, যা এই এলাকার ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিধান কুমার ভান্ডারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন—বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, এফএওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল।

পরে বিকেলে কারিগরি সেশনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২১, সয়েল অলিম্পিয়াড ও মৃত্তিকা দিবসের পুরস্কার বিতরণ করেন।