ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কার্নিশে তিন দিন আটকা বিড়াল, উদ্ধার হলো যেভাবে

মেসবাহ য়াযাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৭:৪০, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

কতদিন ধরে পাশের বাসার কার্নিশে আটকা বিড়ালটি, সেটা কেউ জানে না। তবে, তিন রাত পর বাসায় ফিরে বিড়ালের কান্নায় জানালা খুলে এর অস্তিত্ব খুঁজে বের করেন এটিএন নিউজের সংবাদকর্মী শহিদুল আজমের স্ত্রী লিপি ও ছেলে সরব। এরপর কীভাবে আটকে পড়া বিড়ালটি উদ্ধার হলো, সেই গল্প সবিস্তারে ফেসবুকের পাতায় শেয়ার করেছেন এই গণমাধ্যমকর্মী।

লিখেছেন, ‘আমার স্ত্রী লিপি আর ছেলে সরব। এমনিতেই প্রাণী নিয়ে ওদের বাড়াবাড়ি আছে। আর এতো বিড়ালের আর্তনাদ! তারা চুপ থাকে কী করে? ক’দিন আগে ছেলের এক বন্ধু বাইরে ঘুরতে যাবে বলে তার পোষা দুটি বিড়াল ছানা দিয়ে গিয়েছিলো আমার ছেলে সরবের কাছে। বাসায় অতিথি আসার আনন্দে মেতেছে সব পিচ্চিরা। শেষে শুনলাম, জলাতঙ্কের টিকা নিচ্ছে ছেলে সরব। ভয়ে আমাকে জানায়নি, বিড়ালছানার কামড় খেয়েছে সে।’ 

‘তিন দিনের জন্যে কুয়াকাটা ঘুরতে গিয়েও টিকার এক ডোজ দেয়ার দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় আমাকে। তবুও বিড়াল, কুকুর দেখলে আমার স্ত্রী বা ছেলে দূরে থাকতে পারে না। বোবা প্রাণিগুলোর অসহায়ত্বে ভীষণ কষ্ট পায় ওরা। খাবার নিয়ে ছুটে যায়। পরিবারের অনেকেই এ নিয়ে বিরক্ত। আমি কিন্তু বাঁধা দিই না। ধীরে ধীরে বিবেক, মমতা লোপ পেতে থাকা পৃথিবীতে ভালোবাসার চর্চাটা যদি এভাবেও থাকে মন্দ কী।’ 

বিড়াল উদ্ধারে এগিয়ে আসা রবিনহুডের দল

বিড়াল উদ্ধারের নেপথ্যের কাহিনীতে তিনি বলেন, ‘অবশেষে পাশের বাসার তিন তলার কার্নিশে আটকে পড়া বিড়ালটি আবার ভূমিতে নেমে আসার সুযোগ পেলো রবিনহুডের কল্যাণে। দিন দিন স্বেচ্ছাসেবী এই প্রাণী উদ্ধারকর্মীদের ব্যস্ততা বেড়েই চলছে। আমার অনুরোধে উদ্ধার অভিযান শেষ না হতেই দেখলাম দাঁড়িয়ে এক তরুণ আর আরেক তরুণী। পাশের রোডে তিন তলার কার্নিশে আটকা পড়েছে আরেকটি বিড়াল। রবিনহুডের উদ্ধারকর্মীদের মোবাইল বাজছে। যেতে হবে খিলগাঁও আনসার হেডকোয়ার্টারের পাশে আরেক বাড়িতে।’ 

তিনি জানান- ‘‘রবিনহুডের স্বেচ্ছাসেবক একজন বললেন, ‘আজ অনেক কল আসছে’। যান্ত্রিক এ শহরেও প্রাণের অস্তিত্ব জানান দেয় হয়তো এভাবেই। সাইরেন বাজিয়ে রবিনহুডের গাড়িটি চলতে শুরু করলে। ধীরে ধীরে আমার বাসার সামনের জটলাও ভেঙে যায়।’’

একটু যেন উদাসী হয়ে বলে চলেন শহিদুল আজম, ‘‘হঠাৎই এক নারীকন্ঠের উচ্চারণ আমার মনোযোগ কেড়ে নেয়। তিনি বলছিলেন, ‘মানুষ কান্দে সাহায্য পায় না, অথচ বিড়ালের লাইগা গাড়ি আসে! কী তামশা!’’ 

সবশেষে কী এক ঘোর লাগা কণ্ঠে বলে উঠেন শহিদুল, ‘কী অদ্ভুতই না আমাদের এই শহর!’

/এনএইচ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়