চট্টগ্রাম বন্দর হবে মেরিটাইম কানেক্টিভিটি হাব: নৌ প্রতিমন্ত্রী

চট্টগ্রাম বন্দর ভবিষ্যতে রিজিওনাল মেরিটাইম কানেক্টিভিটি হাব হবে বলে দাবি করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস জেটি এবং সংগৃহিত নতুন টাগবোট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বন্দরের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা অনেক বেড়েছে। এসব সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের জন‍্য টাগবোট সংগ্রহ, সার্ভিস জেটি নির্মাণ, নিউমুরিং কন্টেইনার ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণ এবং অন‍্যান‍্য স্থাপনা সংযোজন বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের জন‍্য নতুন মাইলফলক। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন‍্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, বে-টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ‍্যেও বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে পাঁচটি অগ্রসরমান দেশের তালিকায় বাংলাদেশ আছে। প্রধানমন্ত্রীর সঠিক ও দক্ষ নেতৃত্বে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পেরেছি।’

দেশ এগিয়ে গেলে একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করে, এ অভিযোগ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের ফলে বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন‍্য ধর্না দিচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিন ঐক‍্য গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বের কারণে ষড়যন্ত্রকারীদের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র সফল হতে পারেনি। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে যাবে।’

তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন‍্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে। বে-টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ১৪ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন একটি সার্ভিস জেটি চালু করা হলো। কর্ণফুলী নদীর তীরে নগরীর আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং এলাকায় ১ নম্বর জেটির উজানে এ জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। সার্ভিস জেটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা। জেটিতে ২২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২০ মিটার প্রস্থের ৫ মিটার ড্রাফটের (গভীরতা) ১০০ মিটার লম্বা দুটি জাহাজ একসঙ্গে ভিড়তে পারবে।

চট্টগ্রামে বন্দরের ১ নম্বর গেট সংলগ্ন সার্ভিস জেটির উদ্বোধন করা হয়েছে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন।

নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাসেও এ জেটি ব্যবহার করা যাবে। নতুন সার্ভিস জেটি চালু হওয়ায় বন্দরের মালিকানাধীন বিভিন্ন জাহাজের সুরক্ষা ও বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে গতি আসবে। বন্দরের উদ্ধারকারী জাহাজ, টাগবোট, জরিপ জাহাজ, আউটার থেকে বিদেশি জাহাজগুলোকে জেটিতে আনার দায়িত্বে থাকা পাইলটদের বোট, ফায়ার ফাইটিং বোট, পানি সরবরাহকারী জাহাজসহ প্রয়োজনীয় সকল জাহাজ সার্ভিস জেটি ব্যবহার করবে।

প্রতিমন্ত্রী সার্ভিস জেটিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য সংগৃহিত নতুন টাগবোট উদ্বোধন করেন। বন্দরে আগত বড় বাণিজ‍্যিক জাহাজগুলোর নিরাপদ বার্থিং/আন-বার্থিংয়ে সহায়তা টাগবোটের মূল কাজ। পরে প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নির্মিত নিউমুরিং কন্টেইনার ওভারফ্লো ইয়ার্ড, নবনির্মিত সুইমিংপুল কমপ্লেক্স, বাস্কেটবল গ্রাউন্ড এবং টেনিস কোর্টের উদ্বোধন করেন। নিউমুরিং কন্টেইনার ওভারফ্লো ইয়ার্ডটি কন্টেইনার হ‍্যান্ডলিংয়ের সুবিধা বৃদ্ধির যুগোপযোগী চাহিদা মিটাবে। ইয়ার্ডটির আয়তন ৯০ হাজার ৫২১ বর্গমিটার। এটি নির্মাণে ব‍্যয় হয়েছে ১৭৬ কোটি টাকা। সুইমিংপুল কমপ্লেক্স নির্মাণে ব‍্যয় হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। টেনিস কোর্ট ও বাস্কেটবল গ্রাউন্ড নির্মাণে ব‍্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।