বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জেরে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে: বাবলা
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যেসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা সকলেই দক্ষ ও দেশপ্রেমিক। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জের ধরে অচিরেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার এসব দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদেরও জাতীয় স্বার্থে এটাকে ইস্যু না করে দেশের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার আহ্বান জানান। তিনি তার বক্তব্যে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে কেন এই নিষেধাজ্ঞা তার বোধগম্য নয়। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দেশ ও দেশের মানুষের নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করে। তবে আমি বলবো না সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধোয়া তুলসীপাতা। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদেরকে আমরা অত্যন্ত দক্ষ ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা হিসেবে জানি। যুক্তরাষ্ট্র কেন এই নিষেধাজ্ঞা দিল তা নিয়ে সরকার কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সাথে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তারই প্রেক্ষিতে অচিরেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাদের যেসব দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা প্রত্যাহার করে নেবে।
একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওই নিষেধাজ্ঞার পর দেশে নানা গুজবের ডালপালা ছড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিনই আসছে নানা খবর। প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছে অমুকের ভিসা বাতিল হয়েছে। তমুক ঢুকতে পারেননি। একই সাথে নানা আলোচনা এখানে সেখানে- এই নিষেধাজ্ঞায় সরকার কি চাপে পড়েছে? সামনের দিনগুলোতে সরকার কি আরো বড় কূটনৈতিক চাপে পড়তে যাচ্ছে?
বাবলা বলেন, আমরা দেখেছি বিদেশে অবস্থানরত কয়েকজন ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের গুজব রটাচ্ছে। আর আমাদের দেশের কতিপয় মানুষ সেই গুজবে ডালপালা ছড়িয়ে দিচ্ছে সমাজের সর্বস্তরে। একের পর এক গুজব রটছে সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিলের। তবে ব্যক্তির ভিসা বাতিল সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাস কোন তথ্য প্রকাশ করে না। ফলে এই ধরনের গুজবের সত্যতা যাচাইয়ের কোন সুযোগ থাকে না।
রাজনীতিবিদর প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাপার এই এমপি বলেন, আমাদেরে দেশের কতিপয় দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এইসব বিষয় নিয়ে নেতিবাচক কথা বলছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ভিন্ন ভিন্ন দশ ও মতের হতে পারি। তবে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সবাইকে আরো দায়িত্বশীল ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের বলবো আপনারা এমন বক্তব্য দেবেন না যেটা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
ভারতে শত মতের মানুষ বসবাস করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা একে অপরের প্রতি অত্যন্ত তীব্র ভাষায় কথা বলেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থের বিষয় এলে সবাই এক হয়ে যায়। তেমনি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আমাদের জাতীয় ইস্যু। তাই সমালোচনা বাদ দিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এটা মোকাবিলা করতে হবে। এই ইস্যুর সাথে বিশ্ব দরবারে আমাদের ভাবমূর্তি জড়িত।
আসাদ/এনএইচ
আরো পড়ুন