ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাজধানীর সকল খাল দখলমুক্ত করা হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

সচিবালয় প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০৪, ২৫ জানুয়ারি ২০২২  
রাজধানীর সকল খাল দখলমুক্ত করা হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

রাজধানীতে অবৈধভাবে দখল হওয়া সমস্ত খালগুলোকে উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘উদ্ধারকৃত খালসমূহ সংস্কার করা হলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি নগরবাসীকে একটি আধুনিক-দৃষ্টিনন্দন ও বাসযোগ্য নগর উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।’ 

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় রামচন্দ্রপুর খালের অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার অভিযান কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘যারা সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তারা স্বাভাবিকভাবেই এখন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে সব জায়গায় একটি মেসেজ চলে যাবে যে অবৈধভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করে রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র এখানকার খাল উদ্ধার হবে আর অন্যগুলো হবে না এমনটা ভাবা উচিত হবে না। ঢাকা শহরের যত জায়গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ করেছেন বা করার পাঁয়তারা করছেন তারা সতর্ক হবেন। কোনো দখলবাজদের বরদাস্ত করা হবে না। জনগণের কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সবকিছু করবে সরকার।’

মন্ত্রী জানান, রাজধানীর খালগুলোর একটির সঙ্গে অন্যটির সংযোগ তৈরি করে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে বিদেশি বিনিয়োগ সংস্থার সঙ্গে একাধিক সভা করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। ঢাকা শহরের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতেই হবে।

তিনি বলেন, ‘জনপ্রতিনিধির হাতে দায়িত্ব দিলে খাল উদ্ধার করা সহজ হবে। কারণ, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জনগণ থাকে। তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করলে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব। সে উদ্দেশ্যেই রাজধানীর কিছু খাল ঢাকা ওয়াসার নিকট থেকে দুই সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই দুই সিটি কর্পোরেশন জোরালো অভিযান চালিয়ে খাল উদ্ধার কাজ শুরু করেছে, যার ফলাফল এখন দৃশ্যমান।’

জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য দুই মেয়র আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে সরকারের পূর্ণ সমর্থন আছে। যেকোনো চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার পাশে থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকজন মানুষের জন্য রাজধানীর দুই কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হতে পারে না। আর এটা কখনই করতে দেওয়া হবে না।’ 

রাজধানীতে পরিকল্পিতভাবে ট্রাক ও বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করার কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেখানে যে পরিমাণ রাস্তার দরকার, তা নির্মাণ করতে হবে। আবাসনের জায়গায় আবাসন হবে। সবার জন্য কল্যাণকর ঢাকা গড়তে যা যা দরকার তার সবই করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।’

তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা শহরে এখনও ৫৩টি খালের অস্তিত্ব রয়েছে। এসব খাল উদ্ধার করে যদি নৌ চলাচল ও দুই পাশে ওয়াক ওয়ে নির্মাণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন করা যায়, তাহলে মানুষ ভেনিস ঘুরতে না গিয়ে ঢাকা শহরে আসবে। 

রাজধানীর অন্যান্য খালাগুলো সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়াটার বোর্ডের অধীনে থাকা খালগুলো হস্তান্তরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন থাকা খালসমূহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

মন্ত্রী জানান, পৃথিবীর অনেক সিটি কর্পোরেশন নিজেদের অর্থায়নে এয়ারপোর্ট, সাবওয়ে, ট্যানেল এবং মেট্রোরেল করেছে। আমাদের সিটি কর্পোরেশন-গুলো আগের তুলনায় অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমি বিশ্বাস করি শিগগিরই দেশের সব সিটি কর্পোরেশন আত্মনির্ভরশীল হবে।

পরিদর্শনকালে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি, নগর স্থপতি এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।

আসাদ/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়