সময় বেড়েছে বইমেলার, যা বললেন প্রকাশকরা
অমর একুশে বইমেলার সময়সীমা আরও ১৭ দিন বাড়ানো হয়েছে, যা চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। এ ঘোষণা পরই থেকে প্রকাশকরা দারুণ খুশি। তারা বলছেন, গত দুই বছরে করোনার কারণে প্রকাশনা শিল্পের যে ক্ষতি হয়েছে; এবার সময় বাড়াতে তার কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারবেন।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ আনুষ্ঠানিকভাবে বইমেলার সময় ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর কথা জানান। যদিও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট) বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনোরূপ ঘোষণা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে কয়েকজন প্রকাশক তাদের অসন্তোষের কথাও জানিয়েছেন।
নালন্দা’র রেদওয়ানুর রহমান বলেন, মেলার সময় বাড়ানোর ঘোষণাটা ৩-৪ দিন আগে দেওয়া উচিত ছিল। তবে সময়সীমা বাড়ানোতে আমরা খুশি। ১৪ দিনে যেটুকু বেচাকেনা হতো, পরের ১৭ দিনে নিশ্চয়ই দ্বিগুণ হবে।
শ্রাবণ’র রবীন আহসান বাংলা একাডেমিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম সময় বাড়বে। মুক্তিযুদ্ধের ৫০ এবং জাতীর জনকের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যত বই প্রকাশিত হয়েছে, সেসব নিয়ে প্রদর্শনী করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারিভাবে ব্যাপক প্রচারণা করা যেতে পারে।
ঐতিহ্য’র আমজাদ হোসেন খান কাজল বলেন, মেলার সময় না বাড়লে মনে কষ্ট পেতাম। ক্ষতিও হতো প্রকাশকদের। মেলা আসলে এক মাসই হওয়া উচিত। সময় বাড়াতে আমরা খুশি। তবে ঘোষণাটা যদি ২১ ফেব্রুয়ারি দিতো, তাহলে আরও ভালো হতো।
প্রথমা’র জাকির হোসেন বলেন, আরও ১৭ দিন মেলার সময় বেড়েছে, ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। গত বছরের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারবেন প্রকাশকরা। সময় না বাড়লে প্রকাশনা শিল্পে আরও ধস নামতো। অনেক প্রকাশকই ঘুরে দাঁড়াতে পারতেন না।
পার্ল’র হাসান জায়েদী বলেন, মেলার সময় বাড়ানোর দাবি প্রথম দিনের। সেটা যেহেতু বাড়ানোই হলো, আজকে কেনো? ২-৪ দিন আগে বললে কী হতো? গত দুই বছর মেলা হয়নি, অনেক প্রকাশকই সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এবার একটু ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তাই মেলার সময় বাড়ানোতে আমরা খুশি।
সুবর্ণ’র শাহরিন হক তিথি বলেন, মেলার সময় না বাড়লে প্রকাশকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো সন্দেহ নেই। তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হতো পাঠকের। মাসের মাঝামাঝি মেলা শুরু হয়েছে। অনেকে এখনও মেলায় আসতে পারেননি। আমাদের মূল পাঠক মধ্যবিত্ত। মাসের শেষে তাদের বই কেনার টাকা থাকে না। এখন তারা মাসের প্রথমে এসে পছন্দমতো বই কিনতে পারবেন। পাঠকের বই কেনা মানেই হচ্ছে প্রকাশকদের আর্থিক লাভবান হওয়া। তাই আমরা খুশি। তবে আরও আগে জানানো যেতো।
অন্য প্রকাশ’র মাজহারুল ইসলাম বলেন, মেলার প্রথম দিনই প্রকাশকদের তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি ছিল, যাতে ১৭ মার্চ পর্যন্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সেই দাবির প্রতি সায় দিয়েছিলেন। অবশেষে মেলা মাসব্যাপী হচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটা আরও আগে দেওয়া যেত। তাতে পাঠকরা জানতে পারতো। অনেকে ভেবেছেন, মেলা ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। তারপরও সময় বাড়ানোর জন্য প্রকাশকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা করছি, গত বছরের ক্ষতির কিছুটা অংশ পুষিয়ে নিতে পারবেন প্রকাশকরা।
ঢাকা/এনএইচ
আরো পড়ুন