ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জলবায়ু অভিযোজন অর্থায়ন বাড়ানোর আহ্বান মেয়র আতিকের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ১৯ মে ২০২২   আপডেট: ১৩:১৭, ১৯ মে ২০২২
জলবায়ু অভিযোজন অর্থায়ন বাড়ানোর আহ্বান মেয়র আতিকের

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বে জলবায়ু অভিযোজন অর্থায়নকে মোট জলবায়ু অর্থায়নের ৫০ শতাংশে উন্নীত করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণে আন্তর্জাতিক অভিবাসন রিভিউ ফোরামের উদ্যোগে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করে ডিএনসিসি মেয়র তার বক্তব্যে এ কথা বলেন।

মেয়র আতিক বলেন, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন দুই হাজার লোক ঢাকায় চলে আসে। জলবায়ু উদ্বাস্তু বৃদ্ধির পাশাপাশি মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই একটি গুরুতর মানবিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আরও ভালো সুযোগের সন্ধানে ঢাকার মতো শহরের দিকে ক্রমবর্ধমানভাবে চলে আসছে। 

তিনি বলেন, ঢাকা নিজেও জলবায়ু বিপজ্জনক একটি শহর। বিশেষত বন্যা এবং তাপের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, যা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলে।  দুই কোটি মানুষের এই শহরে ৪০ শতাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক বসতি স্থাপন করেছে এবং ৭০শতাংশ অনানুষ্ঠানিক বসতি স্থাপনকারীরা ইতোমধ্যেই তাদের জীবনে পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব অনুভব করছে। শহরের সবাই সম্ভাব্যভাবে জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন।

মেয়র আরও বলেন, সাধারণত দেখা যাচ্ছে শহরগুলোই জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং অভিবাসনের প্রথম সারিতে রয়েছে। একটি সংখ্যার মানুষ শহরে অভিবাসনে বাধ্য হচ্ছে যারা অন্যদের জন্য ঝুঁকির কারণ। ইতোমধ্যে C40 Cities এবং MMC এর সদস্য হিসেবে অন্য মেয়রদের সাথে নিয়ে COP-26 এ জলবায়ু পরিবর্তনে সংকট নিরসনে জোরারোপ করেছি।  জলবায়ু এবং অভিবাসনে বিশ্বব্যাপী শহরগুলো নেতৃত্ব দিচ্ছে, কিন্তু তারা একা এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারে না।

গ্লোবাল কমপ্যাক্টের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু অগ্রাধিকার রয়েছে যা আমি আমার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমকক্ষদের জন্য জোর দিতে চাই:
১) জলবায়ু সংকট যেহেতু মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে, তাই জলবায়ু অভিযোজনে আমাদের আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ দরকার। মোট জলবায়ু তহবিলের অন্তত ৫০ শতাংশ ঢাকার মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল এবং দ্রুত বর্ধনশীল শহরের জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন।

২) আমাদের অভিবাসনকে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজনের একটি রূপ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা উদ্বাস্তু তাদের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। সাথে সাথে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের সুযোগ দিতে হবে।

৩) আমাদের এই কর্মগুলোর সাথে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে হবে।  বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়িয়ে বিশেষ করে সবুজ খাতে অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে তাদের অবদান বাড়াতে হবে।

এটি অর্জনের জন্য অপরিহার্যভাবে শহর এবং মেয়রদের জলবায়ু এবং অভিবাসন সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক নীতি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় আরও জড়িত হওয়া এবং পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, যার মধ্যে রয়েছে জাতীয় জলবায়ু, অভিবাসন, এবং উন্নয়ন নীতিগুলো। যেমন NDC এবং অভিবাসন এবং স্থানান্তরিত জনগণের জন্য জাতীয় কৌশল প্রণয়ন। 

পরে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ শহীদের সাথে উনার অফিসে মিটিং করেন। 

এ সময় সভাপতির সাথে আলাপকালে মেয়র বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বে আমরা আমাদের সদস্য রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে জলবায়ু অভিযোজন অর্থায়নকে মোট জলবায়ু অর্থায়নের ৫০ শতাংশে উন্নীত করার আহ্বান জানাই এবং নিশ্চিত করতে হবে এই অর্থ যেন ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সংকট নিরসনে ব্যবহার করা হয়।

/মেয়া/সাইফ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়