ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুতে উঠতে বললেন তথ্যমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩১, ২৪ মে ২০২২  
ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুতে উঠতে বললেন তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ (ফাইল ফটো)

পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সেতুতে উঠতে বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (২৪ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল, বেগম খালেদা জিয়া, সিপিডি, টিআইবি নানামুখী অপতৎপরতা ও বিরূপ মন্তব্য করেছে। আরও অনেক ব্যক্তি আছেন, যারা পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করার জন্য হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে, এমনকি বিশ্বব্যাংককে ই-মেইল করেছিলেন; তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্র ও অপতৎরতা সত্বেও বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ।’

‘এই সেতু বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য। তবে, যারা এই অপপ্রচারগুলো করেছিল, তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমি বলব, ক্ষমা চেয়ে তারা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যেতে পারে।’

পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্যই সম্ভব হয়েছে, দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে যে আমরা এমন একটি সেতু নির্মাণ করতে পারব, সেটি বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে কেউ ভাবতে পারেনি। তারা মনে করেছিল যে, বাংলাদেশের মতো দেশের পক্ষে এই সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে দেখিয়ে দিয়েছেন। এই সেতুতে অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংক অনেক প্রশ্ন করেছিল। তারা কানাডার আদালতে মামলা করেছিল। বাংলাদেশ সরকার করেনি। তারাই হেরে গেছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে, এখানে দুর্নীতি বা দুর্নীতির চেষ্টা কিছুই হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এর পর পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমাদের সেই অর্থের দরকার নেই। আমরা গ্রহণ করিনি।’

‘আমাদের দেশে পদ্মা সেতু যাতে না হয়, আমি নাম উল্লেখ করতে চাই না, তারা সারা দুনিয়া থেকে পুরস্কার নিয়ে বেড়ায়, তারা চেষ্টা করেছে, তাদের সাথে আবার বিএনপিসহ রাজনৈতিক নেতারা লাফালাফি করেছে। আবার টিআইবিসহ আরও কয়েকটি সংস্থা, সুজন, সিপিডি—সবাই যেভাবে লাফালাফি করেছিল, সমালোচনা করেছিল, তাদের আসলে ক্ষমা চাওয়ার আগে পদ্মা সেতুতে উঠার অধিকার আছে কি না, জনগণ জানতে চায়? আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অপপ্রচার, মিথ্যা ভাষণ এবং দেশবিরোধী তৎপরতার জন্য তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত,’ বলেন মন্ত্রী।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য এবং তা বিএনপি নেতাদের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে অনেকবার হত্যার অপচেষ্টা হয়েছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। আল্লাহর অশেষ রহমতে এত ষড়যন্ত্র, হামলা সত্বেও শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন। দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উদাহরণ।’

‘প্রতিহিংসার রাজনীতি আমাদের নেত্রী করেন না। করলে খালেদা জিয়ার তো বাইরে থাকার কথা না। প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাহী ক্ষমতা বলে খালেদা জিয়াকে জেলের বাইরে রেখেছেন। মির্জা ফখরুল সাহেবরা সন্ত্রাসের রাজনীতি, মেরে ফেলার রাজনীতি করেন। তাদের এসব কথা না বলে জাতির কাছে পদ্মা সেতু নিয়ে যে বক্তব্য করেছে, সেজন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’

এ সময় ফ্রান্সে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মুজিব—একটি জাতির রূপকার’ ছবির ট্রেলার উদ্বোধনের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রধান ভেন্যুতে এই মুভির পোস্টার শোভা পাচ্ছে। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম, তার আত্মত্যাগ এবং একটি জাতির রূপকার হিসেবে তার যে ত্যাগ, যে সংগ্রাম, যে অর্জন; সেগুলো তুলে আনা হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুর মতো বিশ্বনেতার জীবন-কর্মকে আড়াই ঘণ্টার চলচ্চিত্রে তুলে আনা সহজ নয়, মন্তব্য করে ড. হাছান বলেন, ‘এরকম বিশ্বনেতা যারা আছেন, তাদের কারোরই জীবনকে আড়াই-তিন ঘণ্টায় তুলে ধরা কঠিন। কিন্তু, এই মুভিতে সেটি করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই চলচ্চিত্রটি একটি ডকুমেন্টরি হিসেবে কাজ করবে।’

ট্রেলারে ভারত-বাংলাদেশে মৈত্রী বিষয়ে ওঠা একটি বক্তব্যের সমালোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু এটি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে, সেজন্য ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীর বিষয়টি এখানে এসেছে। কিন্তু পুরো ছবিতে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম, অর্জনটাই তুলে আনা হয়েছে।’ 

পারভেজ/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়