শুরু হলো বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের ৬ষ্ঠ বিডিসিগ

ইন্টারনেট দুনিয়ায় অংশীজনের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের আয়োজনে ৩ দিন ব্যাপী ৬ষ্ঠ বিডিসিগ-২০২২ শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেল ৩টায় শুরু হয় বিশেষ এই আয়োজন। বিডিসিগ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান এবং বিডিএসআইজি’র লক্ষ্য-উদ্দেশ্যসহ ২০১৭ সালে থেকে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বিডিএসআইজি’র বিভিন্ন আয়োজনের উপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা দেন।

বিএনএনআরসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিআইজিএফ’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এএইচএম বজলুর রহমান বলেন, বিআইজিএফ, ডিজিটাল বাংলাদেশের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারের সাথে কাজ করছে। বিআইজিএফ জ্ঞান সৃষ্টি, জ্ঞান সংরক্ষণ, জ্ঞান প্রচার এবং জ্ঞান ব্যবহারের জন্য  সরকারের সাথে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতিগত পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংলাপ ও আলোচনা সভা পরিচালনা করে। এ ছাড়া বিডিএসআইজি স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা জোরদার করার জন্যও কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি থেকে আইজিএফ’র কার্যক্রম ও এর পথপরিক্রমা নিয়ে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা দেন কিডস আইজিএফ’র প্রতিনিধি আয়েশা লাবিবা, বিডিএসআইজি’র পক্ষে আশরাফুর রহমান পিয়াস, ইয়ুথ আইজিএফ’র পক্ষে মিসেস সৈয়দা কামরুন জাহান রিপা, মিসেস ফারহা মাহমুদ তৃণা, আহ্বায়ক, উইমেন ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ইন্টারনেট ডিজিটাল সমাজের প্রাণ কিন্তু আমাদের অর্থপূর্ণ ইন্টারনেট সংযোগের জন্য কাজ করতে হবে।

স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের নিরাপদ সামগ্রী সরবরাহ করতে হবে এবং ইন্টারনেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সবার জন্য উপলব্ধ ইন্টারনেট এবং বিনামূল্যে এবং সাশ্রয়ী মূল্যের উপর জোর দেন।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি মো. এমদাদুল হক সরকারের পদক্ষেপের বর্ণনা দেন এবং তিনি গ্রাম পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড সংযোগ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে হাসানুল হক ইনু ইন্টারনেট ব্যবহার ও ডিজিটাল সমাজের উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ই-কমার্স আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তবে ইন্টারনেট সাশ্রয়ী মূল্যের হওয়া উচিত এবং সবার জন্য সমানভাবে তা নিশ্চিত করা উচিত। ডিজিটাল ব্যবধান কমাতে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সম্ভব হলে ডিজিটাল ডিভাইডের মূল্য কমাতে হবে। আমাদের অবকাঠামো তৈরি করতে হবে অন্যান্য ডিভাইস সবার জন্য সহজলভ্য করা উচিত। সবার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি জরুরি বিষয়। জনসাধারণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের হার প্রদানের জন্য টেলিকম কোম্পানিগুলোর জন্য ভ্যাট এবং ট্যাক্স হ্রাস করুন।

তিনি আরো বলেন, স্মার্টফোনের দাম কমানো দরকার। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অফিসের জন্য ডিজিটাল সেল গঠনের পরামর্শ দেন। সবার জন্য ডিজিটাল সাক্ষরতা এবং জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কমিটি গঠন জরুরি বলেও মতামত দেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের জন্য ইন্টারনেটকে একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।

প্রসঙ্গত, তিন দিনের এই আয়োজনে প্রযুক্তি শিল্প এবং ইন্টারনেট গভর্নেন্স বিষয়ক বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন, ডেটা সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা, ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি), সাইবার নিরাপত্তা, ডিজিটাল অর্থনীতি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, টেকনিক্যাল কমিউনিটি, একাডেমিয়া, যুব এবং মিডিয়ার স্টেকহোল্ডারদের যারা ইন্টারনেট গভর্নেন্স প্রক্রিয়ায় আগ্রহীরা এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন।