ট্রেনের টিকিটের নতুন অ্যাপ উদ্বোধন
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে ‘রেলসেবা’ নামে নতুন মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বুধবার (২২ জুন) দুপুরে রেল ভবনে এ অ্যাপের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে রেল যাত্রীরা বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেট ওয়েবসাইটের eticket.railway.gov.bd পাশাপাশি ‘রেলসেবা’ অ্যাপ ব্যবহার করে ট্রেন টিকিট কাটতে পারবেন। এর মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি বন্ধ হবে। স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা।
ই-অ্যাপ তৈরি ও ব্যবস্থাপনার কাজ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং পার্টনার সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি। সহজ জানায়, নতুন ‘রেলসেবা’ অ্যাপটি বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিজের নাম, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস, জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন নম্বর ইত্যাদি তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে কোনও যাত্রী যদি এরই মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকিট ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেন তাহলে তাকে দ্বিতীয়বার রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। শুধু মোবাইল নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলেই হবে।
‘রেলসেবা’ অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটার জন্য যাত্রীকে তার পছন্দ অনুযায়ী যাত্রা শুরুর স্টেশন, গন্তব্য স্টেশন, পছন্দ অনুযায়ী ট্রেনের ক্লাস ও যাত্রার তারিখ সিলেক্ট করতে হবে। একই সঙ্গে ‘ট্রেন ডিটেইলস’ থেকে সহজেই ট্রেনের বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারবে। তারপর অ্যাভেলেবল ট্রেন থেকে পছন্দ মতো বগি এবং সিট সিলেক্ট করে অনলাইন পেমেন্টের (ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড অথবা এমএফএস) মাধ্যমে টিকিট কেটে ফেলতে পারবেন। এরই মাধ্যমে ই-টিকিট যাত্রীর রেজিস্ট্রার করা ই-মেইলে পাঠানো যাবে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ঈদ উপলক্ষে টিকেট বিক্রয় কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে যাত্রীদের সুবিধার্থে ৬ জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। সেগুলো হচ্ছে দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল, চাঁদপুর স্পেশাল ১,২ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়) ঈদ স্পেশাল, শোলাকিয়া স্পেশাল ১,২।
পড়ুন: ঈদুল আজহায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১ জুলাই
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, আগামী ১ জুলাই থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ঈদের আগাম টিকেট দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে ১ জুলাই দেওয়া হবে ৫ জুলাই এর। একইভাবে ২ জুলাই ৬ জুলাইয়ের, ৩ জুলাই ৭ জুলাইয়ের ৪ জুলাই ৮ জুলাইয়ের এবং ৫ জুলাই ৯ জুলাই এর টিকিট বিক্রয় করা হবে।
‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে টিকেট বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যাত্রীদের এনআইটি এবং জন্ম সনদ ফটোকপি কাউন্টারে দেখাতে হবে। প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কাউন্টার থাকবে। একজন যাত্রী একসাথে সর্বোচ্চ চারটি টিকেট ক্রয় করতে পারবে। স্পেশাল ট্রেনের টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে না শুধুমাত্র স্টেশন কাউন্টার হতে বিক্রি করা হবে।
মন্ত্রী জানান, অগ্রিম টিকিট বিক্রয়ের ব্যবস্থাপনায় ৬টি জায়গা থেকে বিক্রয় করা হবে। ঢাকা (কমলাপুর) রেলস্টেশন থেকে সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট, ঢাকা (কমলাপুর) শহরতলী প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেন, ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেন, তেজগাঁওয়ে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেন ও দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ট্রেন, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেন, ফুলবাড়িয়া থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেন এবং জয়দেবপুর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়) এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রয় করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ঈদ পরবর্তীতে ৭ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ৭ জুলাই ১১ জুলাইয়ের, ৮ জুলাই ১২ জুলাইয়ের, ৯ জুলাই ১৩ জুলাইয়ের এবং ১১ জুলাই ১৪ ও ১৫ জুলাইয়ের টিকেট বিক্রি করা হবে। আগামী ৬ জুলাই থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ঢাকামুখী একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সমূহের বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকবে না। আগামী ৬ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত মিতালী এক্সপ্রেস এবং ৭ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করবে না।
অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারসহ রেলপথ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
আরো পড়ুন