ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

‘মাদককাণ্ডে কূটনীতিক আনারকলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ৩ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ১২:১০, ৩ আগস্ট ২০২২
‘মাদককাণ্ডে কূটনীতিক আনারকলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’

কাজী আনারকলি। ছবি সংগৃহীত

নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত উপপ্রধান কাজী আনারকলির বিরুদ্ধে। এই অপরাধে এরই মধ্যে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তার কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে বাংলাদেশের ‘বদনাম’ করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নিউইয়র্ক সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন টেলিফোনে বলেন, ‘আমি ইন্দোনেশিয়া গিয়েছিলাম। ওই সময় আমাদের রাষ্ট্রদূত পুরো ঘটনাটা বলেছেন। সে (আনারকলি) একজন ড্রাগ অ্যাডিক্ট। তাকে রিহ্যাবে (মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র) পাঠানো দরকার। দেশের বদনাম করে ফেলেছে। আমি তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে বলেছি। রাষ্ট্রদূত তাকে ফেরত পাঠায়।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইন্দোনেশিয়ানরা খুব ভদ্রলোক। বিপুল পরিমাণ মারিজুয়ানাসহ হাতেনাতে ধরা পড়ার পরও তা বাইরে প্রকাশ করেনি। এখন রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে পুরো রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার অপকর্মের পুরোনো ইতিহাস আছে।

এদিকে, আনাকলির আটক বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে সরকার। এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামসকে প্রধান করে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ (বুধবার) থেকে তদন্ত কমিটি আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করছে।

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন কাজী আনারকলি ২০তম বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। 

আনারকলিকে ঢাকায় প্রত্যাহার করে আনার ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ও বিব্রতকর’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা এটা ইনভেস্টিগেট করছি। নিউজটা আমরা দেখেছি, নিউজটা শুধু দেখার বিষয় নয়, আমরা সেই কর্মকর্তার বিষয় কয়েকদিন আগ থেকেই জানি। আমরা তদন্ত করছি। এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর।’

বাসায় ‘বিপুল পরিমাণ মারিজুয়ানা রাখার’ অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ায় আনারকলি আটক হওয়ার পর তাকে জাকার্তা থেকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ জাকার্তায় আনারকলির অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালায় ইন্দোনেশিয়া সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে আটক করা হলেও ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক দায়মুক্তির কারণে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরে ইন্দোনেশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, পররাষ্ট্র ক্যাডারের যে হাই স্ট্যান্ডার্ড, এটার সঙ্গে আমরা কখনোই কমপ্রোমাইজ করব না। তদন্তে যদি সে দোষী সাব্যস্ত হয়, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এ বিষয়ে এটুকু বলতে পারি।

কূটনৈতিক দায়মুক্তি থাকলেও আনারকলির বাসায় অভিযান চালানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, এখানে কোনো ভুল নাই। এবং সেই বাসায় আরেকজন বিদেশি নাগরিক ছিল বলে আমরা শুনেছি। সেক্ষেত্রে পুলিশ যেতে পারে।

মারিজুয়ানা উদ্ধারের ঘটনায় আনারকলির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে আটক অন্যজন নাইজেরিয়ার নাগরিক বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

কূটনৈতিক দায়িত্ব থেকে আনারকলিকে ফেরত আনার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে বাসার গৃহকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে তাকে ফেরত আনা হয়েছিল।  ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ওই রাজ্যে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল ছিলেন এই নারী কূটনীতিক।

আরও পড়ুন: লেবাননে প্রবাসীদের অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগ, দূতাবাসের সতর্কতা

/হাসান/সাইফ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়