ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সারাহর কর্নিয়া নিয়ে ভালো আছেন দুই রোগী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৭, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩  
সারাহর কর্নিয়া নিয়ে ভালো আছেন দুই রোগী

অঙ্গ দান করে দেশে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন সারাহ ইসলাম

সারাহ ইসলামের দান করা কর্নিয়া চোখে লাগিয়ে দুই রোগী ভালো আছেন। এই দুই রোগী চোখের আলো ফিরে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকালে সারা ইসলামের দুটি কর্নিয়া বসানো রোগী ফেরদৌস আখতার (৫৬) ও মোহাম্মদ সুজনের (২৩) চোখ পরীক্ষা করে বিএসএমএমইউ উপাচার্য এ তথ্য জানান।

এ সময় অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি রাতে সারাহ ইসলামের দুটি কিডনি দুজন রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একইসঙ্গে তার দুটি কর্নিয়া দুজনের চোখে বসানো হয়েছে। তার কিডনি এবং কর্নিয়া দান দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি বিশেষ মাইলফলক। এতে চারজন মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন।

সারাহর কর্নিয়া লাগানো একজন রোগী ফেরদৌসী আখতারের বিষয়ে বিএসএমএমইউ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে অজানা ভাইরাসে তার ডান চোখে সমস্যা দেখা দেয়। তখন তিনি চোখে কিছুই দেখতে পেতেন না। স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিকে চোখ দেখানোর পর তেমন উপকার না হওয়ায় সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। সাত বছর আগে তার কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। কিন্তু কর্নিয়া না পাওয়ায় এতদিন তা করা সম্ভব হয়নি।

ফেরদৌসী আখতার নামের এই শিক্ষিকা কর্নিয়া জোগাড় করতে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকাও দিয়ে রেখেছিলেন। সারাহর কর্নিয়া দানের সম্মতি পেয়েই চিকিৎসক শীষ রহমান তার রোগী ফেরদৌসীকে ফোন করে ঢাকায় আসতে বলেন। এরপর সারাহর দেওয়া কর্নিয়া রোগীর ডান চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়। এখন তিনি ডান চোখে স্বাভাবিকভাবে দেখতে পাচ্ছেন বলে জানান ডা. শীষ রহমান।

আরেক রোগী মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পর মোহাম্মদ সুজনও এখন ভালো আছেন।

প্রসঙ্গত, বিএসএমএমইউর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছরের তরুণী সারাহ ইসলাম। তিনি তার মৃত্যুর আগেই অঙ্গদান করে যান। গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে সারাহ ইসলাম ব্রেন ডেথ হওয়ার পরপরই বিএসএমএমইউর ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে তার দুটি কিডনি বের করা হয়। 

সারাহর দুই কিডনির একটি অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন। অপর কিডনিটি বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে হাসিনা আক্তার নামের অপর এক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। তারা দুজনও বর্তমানে ভালো আছেন বলে জানা গেছে।

/মেসবাহ/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়