বৃষ্টি হলেও বিপৎসীমার নিচেই থাকছে নদীর পানি
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচেই থাকছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। সারাদেশে দিনে ও রাতে তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।
সোমবার আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর নিম্নচাপ অব্যাহত রয়েছে। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, স্থল গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন ঝাড়খণ্ড এলাকায় বিরাজ করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, স্থল গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরিশাল, খুলনা ও ঢাকা বিভাগের উপকুলীয়/জোয়ারভাটা প্রবণ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আবহাওয়া সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকার স্থল গভীর নিম্নচাপটি আগামী ১২ ঘণ্টায় দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় উপকূলীয় অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এর ফলে এই সময় খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৫ দিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে।
রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদী ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী ৪ দিন নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৩ দিন পর্যন্ত এসব নদীর পানি ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে।
সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে এবং অন্যান্য নদীসমূহ-মনু ও খোয়াই ইত্যাদির পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৩ দিন পর্যন্ত সিলেট বিভাগের প্রধান নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে।
চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। মুহুরী, হালদা ও গোমতী নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশে এবং উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতার কমে আসায়, আগামী ৩ দিন চট্টগ্রাম বিভাগের নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে।
/এসআরপি/এসবি/