দেবী দুর্গা চিকিৎসক, মহিষাসুর করোনাভাইরাস
ফিচার ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
শরৎ-এ শারদোৎসব নয়, এবার মা আসছেন হেমন্তে। ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। পূজা মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। যদিও চারপাশে সাজসাজ রব এবার নেই। কেন নেই? এই প্রশ্ন অবান্তর। এই করোনাকালে হই-হুল্লোড়ে মেতে উঠে মাকে বরণ করা কতটা ঠিক হবে সে প্রশ্ন যেমন রয়েছে, তেমনি মায়ের হাতেই বধিবে করোনারূপি মহিষাসুর- সে প্রত্যাশাও রয়েছে ভক্তদের।
দু’দিন আগেই কলকাতার কৃষ্ণনগর ঘূর্ণির ভাস্কর পল্লব ভৌমিক এবং রিন্টু দাসের তৈরি মায়ের মূর্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেবী দুর্গাকে একজন পরিযায়ী শ্রমিক ও মায়ের ভূমিকায় দেখানো হয়েছে। তিনি শিশুসন্তান কোলে পেছনে ফিরে দর্শকের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তিনি মূলত ত্রাণ নিতে এসেছেন। শিল্পীর গড়া মায়ের এমন মূর্তি বিশ্বে মহামারির কবলে অসংখ্য দুস্থ মানুষের কথা মনে করিয়ে দেয়।
একই নগরীর মায়ের আরেকটি মূর্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে সাদা এপ্রোন পরে দেবি অসুরের সঙ্গে লড়াই করছেন। এখানে দেবীকে চিকিৎসক হিসেবে কল্পনা করা হয়েছে। সিংহবাহিনী নয়, তার পেছনে রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। হাতে ত্রিশূলের বদলে শোভা পাচ্ছে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ। অসুরকে এখানে করোনাভাইরাসরূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। তার করোনাভাইরাসের মতো অবয়ব বলে দিচ্ছে তিনি আসলে মহিষাসুর নন, তিনি এবার করোনাসুর।
শাস্ত্র বলছে এবার প্রলয়ের ইঙ্গিত আগে থেকেই দেওয়া ছিল। কেননা গতবার দেবীর আগমন এবং গমন দুটোই ছিল ঘোড়ায়। সনাতন শাস্ত্রবিদরা মনে করেন দেবীর একই বাহনে আসা-যাওয়া ভালো ইঙ্গিত নয়। বিশ্ব মহামারির কবলে সে কথারই সাক্ষ্য দিচ্ছে। এবার দেবীর আগমন ও গমন দোলা ও নৌকায়। শাস্ত্র মতে, দোলা মড়কের প্রতীক। অন্যদিকে নৌকা বন্যার আভাস দেয়, একইসঙ্গে ফসলের উৎপাদনশীলতাকেও চিহ্নিত করে। সুতরাং কেমন যাচ্ছে এই সময় অথবা আগামী- দেবীর আগমন এবং গমনেই তা স্পষ্ট। সেটি যেন আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে শিল্পীর কল্পনায়। এবার পূজামণ্ডপে দেবীর এমন রূপ আরো চোখে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ঢাকা/তারা
আরো পড়ুন