ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কেউ কথা রাখেনি`র কবির প্রয়াণ দিবস

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ২৩ অক্টোবর ২০২০  
কেউ কথা রাখেনি`র কবির প্রয়াণ দিবস

কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম বাংলাদেশের ফরিদপুরে।  বড় হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পড়াশুনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।  কলকাতায় থেকেও জন্মভূমির প্রতি তার গভীর টান ছিল।

কতটা টান ছিল তা কবি রুবি রহমানের একটি স্মৃতিচারণেই জ্বলজ্বলে।  ১৯৮৫ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভারতের ‘আবৃত্তিলোকের’ আয়োজিত কবিতা উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমান।  এ উৎসবে ছিলেন কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ও।  তিনি শামসুর রাহমানকে জড়িয়ে ধরে জানতে চাইলেন, তার জন্য বাংলার মাটি নিয়ে গিয়েছেন কিনা!

‘কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি’র কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।  ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর কলকাতায় নিজ বাসভবনে তিনি প্রয়াত হন।  ঘটনাক্রমে এই দিনটি কবি শামসুর রাহমানেরও জন্মদিন।  তাই এইদিনে দুই কবিকেই স্মরণ করছেন বাংলা ভাষাভাষি মানুষ।

সাহিত্যে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন সুনীল।  একদিকে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার আবার অন্যদিকে সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।  তার প্রথম ভালবাসাই ছিল কবিতা। ‘হঠাৎ নীরার জন্য’ থেকে তিনি এক রহস্যময়ীর সঙ্গে পরিচয় করালেন বাঙালি কবিতার পাঠকদের।  গল্প, কবিতা, উপন্যাস নিয়ে তার বইয়ের সংখ্যা দুশো ছাড়িয়ে।

১৯৬৫ সালে দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস ‘আত্মপ্রকাশ’।  বাংলা আধুনিক কবিতার পত্রিকা ‘কৃত্তিবাস’ এরও অন্যতম জনক সুনীল।  তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’, প্রকাশিত হয় ১৯৫৮ সালে।  তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই ‘আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি’, ‘যুগলবন্দী’ , ‘হঠাৎ নীরার জন্য’, ‘রাত্রির রঁদেভূ’, ‘শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা’, ‘অর্ধেক জীবন’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘অর্জুন’, ‘প্রথম আলো’, ‘সেই সময়’, ‘পূর্ব পশ্চিম’, ‘ভানু ও রাণু’, ‘মনের মানুষ’ ইত্যাদি।  শিশুসাহিত্যে তিনি ‘কাকাবাবু-সন্তু’ নামে এক জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজের রচয়িতা।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশ কিছু গল্প-উপন্যাসের কাহিনী চলচ্চিত্রে রূপায়ণ করা হয়েছে।  এর মধ্যে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ এবং ‘প্রতিদ্বন্দ্বী উল্লেখযোগ্য।  এ ছাড়া কাকাবাবু চরিত্রের দু'টি কাহিনী ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’ এবং ‘কাকাবাবু হেরে গেলেন’ চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে।  ‘হঠাৎ নীরার জন্য’ও চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে।

১৯৬৭ সালে তিনি বিবাহ করেন স্বাতী বন্দোপাধ্যায়কে।  একমাত্র সন্তান সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়।  ২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন।  ১৯৭২ ও ১৯৮৯ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন।  ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের জাতীয় সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সাহিত্য আকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়