ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নোট-গাইড বন্ধ কতটা সম্ভব

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১৮ জুলাই ২০২২   আপডেট: ২২:৩১, ১৮ জুলাই ২০২২
নোট-গাইড বন্ধ কতটা সম্ভব

ছবি: সংগৃহীত

সহায়ক বইয়ের বৈধতা দিয়েই চূড়ান্ত হচ্ছে শিক্ষা আইন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সহায়ক বই মূলত নোট-গাইডেরই নামান্তর। সে হিসেবে সরকারের নোট গাইড বন্ধের পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হবে সেটি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

এ বিষয়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সহায়ক শিক্ষা বই আসলে অনেকটা নোট-গাইডেরই ভিন্নরূপ। সহায়ক বইয়ের ওপর নির্ভরতার কারণে সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতির আসল উদ্দেশ্য কতটা কার্যকর হবে সেটি নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা রয়েছে।

তবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, শিগগিরই পুরো ব্যাপারটি আইন আকারে পাশ হবে। সেখানে সহায়ক বই অবশ্যই নোট-গাইডের মতো হবে না। তার একটা রূপরেখা আইনে উল্লেখ করে দেওয়া থাকবে অবশ্যই।

নোট, গাইড বই আর কোচিং বাণিজ্য থেকে শিক্ষাব্যবস্থা বাঁচাতেই চালু করা হয় সৃজনশীল পদ্ধতি। তবে এবারও নিস্তার নেই এমনটাই ভাবছেন কোনও কোনও শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা।

তারা বলছেন, আসলে দিনশেষে নোট-গাইড আর সহায়ক বই অনেকটা ‘যেই লাউ সেই কদু’ ছাড়া আর কিছুই নয়।

রাজধানীর একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মালিহার বাবা মামুনুর রশিদ বলেন, আসলে সহায়ক বলে আলাদা নাম হবে ঠিকই। কিন্তু দিনশেষে তো নোটই। শিক্ষার মানোন্নয়নে এসবের চেয়ে দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতের দিকে সরকারকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসান আব্দুল্লাহ বলেন, এসবের আগে সরকারের উচিত শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়ন। তাহলেই দক্ষতা নির্ভর শিক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভবপর হবে।

জানতে চাইলে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, নোট গাইড বা সহায়ক বই কোনওটিই সমস্যা নয়। এগুলোতে যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের একটা গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলা হচ্ছে সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা মূল বই না পড়ে নোট গাইডে সংক্ষেপে কিছু পড়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। এটাতে তাদের জ্ঞানের পরিধি ছোট হয়ে আসছে।

তিনি বলেন, শুধু আইন করেই এসব সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে না। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সুষ্ঠুভাবে এর বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষকরা যাতে মূল বই পড়ায় সেটিকে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় শুধু আইনই হবে। কার্যকর হয় কতটুকু সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

পাঞ্জেরি প্রকাশনীর রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান সুনীল কুমার বলেন, আসলে নোট গাইড নিয়ে একটা প্রচলিত ভুল ধারণা আছে। আমরা নোট গাইড করি না। বাজারে যেগুলো আছে সেগুলো হলো প্র্যাকটিস বুক। শিক্ষা আইনে কী আছে আমরা এখনও জানি না। তবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য সহায়ক, এমন বই আমরা করবো। তবে অবশ্যই আইন হওয়ার পর সেটা অনুযায়ীই এসব বই তৈরি করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, নোট-গাইডে একেবারে সুনির্দিষ্ট একটি বিষয়ের ওপর প্রশ্ন সাজিয়ে উত্তর দিয়ে দেওয়া হয়। পাঠ্যসূচিতে যা থাকে সেগুলো থেকে প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়। শিক্ষার্থীরা সেগুলো মুখস্থ করে পরীক্ষা দেয়। সহায়ক বইয়ে সেরকম থাকবে না। আমরা শিক্ষা আইনে সেটির রূপরেখা দিয়ে দেব।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের যে পাঠ্যবই আছে সেখানের আলোচনাকে আরও সম্প্রসারিত করে; একটু ভিন্ন আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করে যদি বই রাখা হয় সেটিকে সহায়ক বই হিসেবে দেখছি। সারা বিশ্বেই এ জাতীয় রেফারেন্স বুক আছে।

ঢাকা/এনএইচ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়