ক্যাশলেস হওয়ার শর্তে আইসিটির ১৯ ব্যবসা করমুক্ত
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
বর্তমান সরকার ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ বা নগদ লেনদেনমুক্ত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে নতুন অর্থবছরের বাজেটে ক্যাশলেস লেনদেন জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাজেটে বলা হয়েছে, ক্যাশলেস হওয়ার শর্তে ৩ বছরের জন্য আইসিটির ১৯ ব্যবসা করমুক্ত থাকবে। তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের আয়কর অব্যাহতির সুবিধা পুরোপুরি প্রত্যাহার না করে এ ক্ষেত্রে শর্ত দিয়ে বলা হয়েছে, শর্ত পালন করলে বেশির ভাগ ব্যবসাতেই আগামী তিন বছরের জন্য কর অবকাশের সুবিধা পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে এ তথ্য জানান।
বাজেটে ক্যাশলেস হওয়ার শর্তে আগামী তিন বছরের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১৯ ব্যবসা করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ব্যবসাগুলো হচ্ছে এআই বেজড সলিউশন ডেভেলপমেন্ট; ব্লকচেইন বেজড সলিউশন ডেভেলপমেন্ট; রোবোটিকস প্রসেস আউটসোর্সিং; সফটওয়্যার অ্যাজ আ সার্ভিস; সাইবার সিকিউরিটি সার্ভিস; ডিজিটাল ডেটা অ্যানালিটিকস ও ডেটা সায়েন্স; মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস; সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও কাস্টমাইজেশন; সফটওয়্যার টেস্ট ল্যাব সার্ভিস; ওয়েব লিস্টিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ও সার্ভিস; আইটি সহায়তা ও সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্স সার্ভিস; জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস; ডিজিটাল অ্যানিমেশন ডেভেলপমেন্ট; ডিজিটাল গ্রাফিকস ডিজাইন; ডিজিটাল ডেটা এন্ট্রি ও প্রসেসিং; ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ও ই-পাবলিকেশন; আইটি ফ্রিল্যান্সিং; কল সেন্টার সার্ভিস; ডকুমেন্টে কনভারশন, ইমেজিং ও ডিজিটাল আর্কাইভিং।
ভবিষ্যতে যেসব ব্যবসা কর অব্যাহতির সুবিধা পাবে না, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), আইটি প্রসেস আউটসোর্সিং, ওয়েবসাইট হোস্টিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সার্ভিস, ক্লাউড সার্ভিস ও সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন।
উল্লেখ্য, একটি উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০১১ সাল থেকে কর অব্যাহতির সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে পরে সরকার এ সুবিধার মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ায়।
অবশ্য আগে আইসিটি খাতের ২৭টি ব্যবসায় কর অব্যাহতির সুবিধা ছিল। ভবিষ্যতে যে ১৯টি ব্যবসা কর অব্যাহতির সুবিধা পাবে, তার মধ্যে অনেকগুলো এই তালিকায় ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বিশাল অঙ্কের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ স্লোগানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
হাসান/তারা