ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১৮ ১৪৩১

মোস্তফা ভিডিও গেমের দোকানে একদিন

হৃদয় তালুকদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ৩১ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ১৫:৩৬, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
মোস্তফা ভিডিও গেমের দোকানে একদিন

খুব কম মানুষই ভিডিও গেমস খেলতে আসে। ছবি: লেখক

নব্বইয়ের দশকের যে কেউই হয়তো এই ছবিটি দেখে ছেলেবেলায় ফিরে যাবেন। মনে পড়ে যাবে, কৈশোরের সেই মধুর দিনগুলো। স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে কিংবা বাবার পকেটের টাকা চুরি করে ভিডিও গেমস খেলেনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। এখনো হয়তো সেসব স্মৃতি ভেবে অনেকেই নস্টালজিয়া হয়ে যান। এসব গেম খেলার জন্য বাবার বকুনি ও স্যারের হাতের মার খেতে হয়েছে অনেকেরই।

বর্তমানে হাতে হাতে মোবাইল ফোন। ইন্টারনেটের সুবাদে কত শত গেমস খেলার সুযোগ রয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা বলা কঠিন। নব্বইয়ের দশকের শিশু-কিশোরদের জন্য একটি ভিডিও গেমসই ছিল ‘মোস্তফা’।  রাস্তার মোড়ে, বাজারে দেখা মিলতো ভিডিও গেমস-এর দোকান। এই হারিয়ে যাওয়া গেমস-এর দোকান এখনও রয়েছে পুরান ঢাকায়। গেন্ডারিয়া এলাকার ধূপখোলা বাজারের পাশে ডিস্টিলারি রোডে দেখা মিলবে এই দোকান।

দোকানে প্রবেশ করতে দেখা গেলো কয়েকজন ছেলে গেমস খেলছে। প্রতিটি মেশিনেই রয়েছে ভিড়।  ৮ টি ভিডিও গেমস খেলার মেশিন থাকলেও সচল রয়েছে ৬টি। গেমস খেলার জন্য একটি করে কয়েন নিতে হয় যার দাম দুই টাকা। দুই টাকার কয়েন দিয়ে শত্রুর কাছে নিজে ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত খেলা যায় এই গেমস। এই গেমস-এর অন্যতম চরিত্র মোস্তফা। এই নামেই অধিক পরিচিত গেমসটি। যদিও এর প্রকৃত নাম ক্যাডিলাকস অ্যান্ড ডাইনোসরস।

জানা যায়,  ১৯৯৩ সালে জাপানের বিখ্যাত কোম্পানী ক্যাপকম ‘জিনোজোইক টেলস’ নামের একটি বুক সিরিজ অবলম্বনে এই গেমসের প্রচলন করে। এই গেমসটির চারটি চরিত্র রয়েছে জ্যাক টেনর‌্যাক, হ্যানা ডান্ডি, মুস্তাফা কায়রো এবং মেস ও’ব্রাডোভিক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায় মোস্তফা গেমসটি।

ভিডিও গেমসের এই দোকানের দেখবাল করছেন আকিব খান। এই দোকান তার বাবার দেওয়া। বাবা জাহিদ খান আজ থেকে ২০ বছর আগে ব্যবসা শুরু করেন এই গেমসের দোকানের মাধ্যমে।  এক সময় তুমুল জনপ্রিয়তা ও ব্যবসা হলেও বর্তমানে তা নেই বললেই চলে। দিনে ৫০০ টাকার বেশি আয় করা সম্ভব হয় না ঈদ ছাড়া।

রাইজিংবিডিকে আকিব খান বলেন, ‘এখন স্মার্টফোনের যুগ, খুব কম মানুষই ভিডিও গেমস খেলতে আসে। দিনে ৪০০-৫০০ টাকা আয় করা যায় এক সময় সেটা অনেক বেশি ছিলো। এখনতো লোকই আসেনা, ঈদের সময় লোকজনের একটু ভিড় হয়।’ 

ভিডিও গেমস খেলতে আসা আরিফ নামের এক কিশোর বলে, ‘এখন তো আশেপাশে খেলার মাঠ নেই যে ক্রিকেট বা ফুটবল খেলবো। সময় পেলে গেমস খেলতে আসি। এই গেমসগুলো খেলতে আমার খুবই ভালোলাগে।’

ঢাকা/লিপি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়