ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

এ কেমন ভোটের রাজনীতি!

শেখ সোহেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এ কেমন ভোটের রাজনীতি!

ছবি : শেখ সোহেল

আজ ঢাকা সিটি করপোরেশনের ভোট।  সকালে বের হলাম ভোট দিতে।  পাশাপাশি নির্বাচনের পরিবেশ কেমন ঘুরে দেখার ইচ্ছে ছিল।  ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল ৮টায়।  চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।  প্রথমবারের মতো ঢাকা সিটি নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব‌্যবহার করে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। 

তাই একটু বাড়তি আগ্রহ নিয়ে বাসা থেকে বের হতেই দেখলাম বেশ কিছু পরিচিত মুখ। কেউ ভোট দিয়েছেন, কেউ দিতে পারেননি।  আবার অনেকেই ভোটের পরিবেশ নিয়ে কথা বলছেন।  শেষের এই বক্তাদের অনেকেই সরকারবিরোধী।  তাই তাদের কথা খুব একটা আমলে নিলাম না। এগিয়ে গেলাম ভোটকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে। সকাল সাড়ে এগারোটায় দক্ষিণ কাফরুলের গির্জা স্কুল ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখলাম সেখানে ভোটারের চেয়ে পোলিং এজেন্ট এবং অন্যান্য লোকজনই বেশি। এরপর গেলাম বিজয় স্কুলে।  সেখান থেকে গেলাম উত্তর কাফরুল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রেই প্রায় একই অবস্থা। 

কি আজব! এমন ভোট আমি কখনও দেখিনি। পরাজয় কেউ এভাবে মেনে নিতে পারে? তাহলে আর নির্বাচনে আসার দরকার কি ছিল? চুড়ি পরে ঘরে বসে থাকলেই হতো।  ভোট যুদ্ধের মাঠে নেমে পিছুটান দেয়া বা নিষ্ক্রিয় থাকা একেবারেই অনুচিত।  পৃথিবীর জন্মের পর থেকেই ক্ষমতার জন্য যুদ্ধ চলছে এবং চলবে। কেউ কাউকে এমনি এমনি ক্ষমতা ছেড়ে দিবে না।

যাই হোক, এই কেন্দ্রের ভোটার আমি তাই ভোট দিতে নির্দিষ্ট কক্ষে প্রবেশ করলাম। যথারীতি আঙুলে ছাপ দিয়ে বুথে প্রবেশ করলাম। সেখানে দেখলাম একটি নির্দিষ্ট দলের লোক আমাকে নির্দিষ্ট একটি বাটনে চাপ দিতে বলছেন! আমি বললাম, ‘আপনি এখানে কী করছেন?’ তিনি বললেন, আমাকে শিখিয়ে দেয়ার জন‌্যই নাকি তিনি সেখানে এসেছেন।  কেউ কি বুথে প্রবেশ করে আমাকে বলতে পারে- আমি কোথায় ভোট দিব? আমি প্রতিবাদ করলাম।  কর্মরত কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালাম। তিনি সদুত্তর দিতে পারলেন না। অবশেষে আমি ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসলাম। আমি প্রতিবাদ করেছি বলে সঠিকভাবে ভোট দিতে পেরেছি।  কিন্তু সবাই কি প্রতিবাদ করতে পারে? আমরা এ কোন দেশে বাস করছি?

এরপর বাইরে বের হয়ে কেন্দ্রের ছবি তুলতেই একজন এসে আমার মোবাইল ছিনিয়ে নিলেন। আমি সেখানেও প্রতিবাদ করলাম এবং ছবি নিয়ে ফিরে এলাম।  এখন কথা হচ্ছে- এভাবে প্রতিটি জায়গায় কেন আমাকে প্রতিবাদ করতে হবে? তাহলে পুলিশ এবং অন্যান্য কর্তব্যরত লোকজন কী করছেন? 

বিরোধী দলের লোকজনের ভাবটা এমন যে, তাদের কোলে করে ক্ষমতায় কেউ বসিয়ে দেবে। এটা তো সম্ভব না। ফাঁকা মাঠে কিছু দুষ্টু লোকজনই এই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। আর দোষ হচ্ছে সরকারের। সরকারের অবশ্যই দায় আছে কিন্তু বিরোধী দলকে আদর করে ক্ষমতায় কি বসাবে সরকার? পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই। তাহলে আর গণতন্ত্র কেন? এই ভোট কেন? ভোটের মাধ‌্যমেই নির্বাচিত হবে কে ক্ষমতায় আসবে। কে নেমে যাবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এজন‌্য বিরোধী দলকে অবশ‌্যই মাঠে থাকতে হবে। কিন্তু কোথাও সেই চিহ্ন চোখে পড়ল না।

জানি না কোন দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি!

 

ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়