ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘হোম কোয়ারেন্টাইন নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন’

আবু নাসের মোহাম্মাদ সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ২৫ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘হোম কোয়ারেন্টাইন নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন’

হোম কোয়ারান্টিন আক্ষরিক অর্থে ভালো বলে মনে হলেও প্রায়োগিক ক্ষেত্রে আমাদের দেশে তার সফল বাস্তবায়ন অনেক কঠিন।

চীন পুরো উহানকেই কোয়ারেন্টাইন করেছিলো। সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া সেটাই ফলো করেছে এবং তারা সফলও হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, আমরা কিভাবে সেটা করতে পারতাম?

ল্যান্ডপোর্ট বন্ধ করে আকাশ পথে আসা সব যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ইজতেমা ময়দান, স্টেডিয়াম (ব্রাজিল যেমন এখন করছে) আর পূর্বাচলে কোয়ারান্টিন করতে পারতাম। আর আমরা আবাসিক হোটেল, কিছু স্কুল-কলেজ, কমিউনিটি সেন্টার এই উদ্দেশে ব্যবহার করতে পারতাম। সেখান থেকে নির্দিষ্ট সময় পর ক্রমান্বয়ে ডাক্তারের ছাড়পত্র সাপেক্ষে প্রবাসীরা বাড়ি ফিরতে পারতেন। এই কঠিন দায়িত্বের পুরোটা দিতে হতো আমাদের সামরিক বাহিনীকে।

এদিকে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট এবং চিকিৎসক-নার্সদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের জোগান আরো আগে নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিলো। ভাইরাস শনাক্তকরণ কিট শুরুতে না পাওয়া গেলেও ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড মেনে আমরাই তৈরি করতে পারতাম।

এ অবস্থায় হোম কোয়ারেন্টাইন নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন। তাই, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও হাসপাতাল খোলা প্রয়োজন। আর কার্যকর টোটাল লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।

ভারত প্রায় ১.৩৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার বিশাল দেশ হয়েও লকডাউনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অনেক সময় আমরা মনে করি, জনসংখ্যার তুলনায় আক্রান্ততো অত্যন্ত নগণ্য। কিন্তু এটাই মারাত্নক একটা ভুল ধারণা। কারণ পর্যাপ্ত সংখ্যক টেস্ট করা না হলেতো আক্রান্তের সংখ্যা কমই থাকবে। উদাহরণ হিসেবে আমেরিকার কথা বলা যায়। যখনই আমেরিকা তাদের টেস্টিং ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে দিলো, তখনই আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে লাগলো। তাই ভাইরাসের বিস্তার হবে, তারপর আমরা ব্যবস্থা নিবো; এমন ভাবা এক্ষেত্রে সমীচীন হবে না। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব এবং কুয়েত ভাইরাসের সম্ভাব্য বিস্তারের আগেই লকডাউন করেছে।

সামরিক বাহিনীসহ আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও তাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সামগ্রী দিতে হবে। এক্ষেত্রে, চিকিৎসক-নার্সসহ সবার সমন্বিত উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টা ছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবিলা অসম্ভব।

সামনের সময়গুলো কঠিন, এপ্রিল ও মে মাস আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষার মাস।

আমরা অনেক সময় পেয়েছিলাম, হয়তো নষ্ট করে ফেলেছি, তবুও আমরা পরিত্রাণ পাওয়ার আশাবাদী।

সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


ঢাকা/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়