১৪ দিনের চ্যালেঞ্জ: করোনা থেকে মুক্তি

করোনাভাইরাস বিশ্বের অনেক উন্নত দেশকে বিপর্যস্ত অবস্থায় নিয়ে গেছে। বিশ্বে এখন আক্রান্ত প্রায় ১৬ লাখ মানুষ। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখের কাছাকাছি মানুষের জীবন প্রদীপ নি‌ভি‌য়ে‌ছে এই ভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, ইতা‌লি, চীনের মতো দেশ এখন করোনার কাছে অসহায়। আমাদের দেশে প্রথম আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। গত এক মাসে ইতোমধ্যেই ভাইরাসটি প্রায় চারশ মানুষকে আক্রান্ত করেছে এবং কেড়ে নিয়েছে ২৭ জনের প্রাণ। এই মুহূর্তে দেশে সরকারি-বেসরকারি নানাভাবে ভাইরাসটি প্রতিরোধে আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। কিন্তু যে যতই চেষ্টা করুক এই ভাইরাসকে মেরে ফেলার মতো কোনো ওষুধ যেহেতু এখনো আবিষ্কার হয়নি, সুতরাং আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একে প্রতিহত করতে না পারলে ব্যাধিটি যে একেবারে আমাদের মেরুদণ্ডে আঘাত করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রাণঘাতি ভাইরাসটিকে প্রতিহত করতে হাতে উপায় এখন কেবল একটাই। উপায়টি হচ্ছে প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভাইরাসটিকে নিজ শরীরে প্রবেশ করতে না দেয়া। এজন্য আগামী ১৪ দিনের একটি চ্যালেঞ্জ আমরা সবাই নিতে পারি।

চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে,
১) আগামী ১৪ দিন আমরা বাইরের কারো সাথে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্যবিধি ছাড়া মিশবো না। 
২) দড়জার বাইরের কিছু টাচ করলেই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেব।
৩) মুখে মাস্ক না পরলে তার সাথে কথা বলবো না, বা তার সামনেই যাবো না।
৪) কোনো কারণে বাইরে গেলে বাসায় ফিরেই ব্যবহৃত জুতা স্প্রে করবো বা জুতা বাইরে রাখবো।
৫) অন্যের মোবাইল বা কোনো জরুরি জিনিসপত্র ব্যবহার করবো না।

লক্ষ্য করুন, মাত্র ১৪-২০ দিনেই এই ভাইরাসটিকে দেশ থেকে পুরোপুরি ভ্যানিশ করে দেওয়া সম্ভব, যদি আমরা কেউই এই কদিন এই শত্রুকে নিজের শরীরে ঢুকতে না দেই।

জাস্ট আগামী ১৪টা দিন প্রত্যেকেই শুধু নিজ নিজ শরীরকে এই ভাইরাসমুক্ত রাখুন, ব্যাস এরপর সবাই মিলে আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবো।

মনে রাখবেন, আক্রান্ত ব্যক্তি খোলা মুখে কথা বললেও তার নিজের শরীরসহ চারপাশের ২-৩ ফিট পর্যন্ত এই ভাইরাসের শতশত জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।

আক্রান্ত ব্যক্তি কে, তা আপনি জানেন না। আক্রান্ত ব্যক্তি কোথায় স্পর্শ করেছে তা আপনি জানেন না। আক্রান্ত ব্যক্তি কোন কোন জায়গায় থুথু ফেলেছে, হাঁ‌চি দিয়েছে তাও জানেন না।

কাজেই, ধরে নিন ভাইরাসটির জীবাণু এখন সর্বোত্রই পড়ে আছে। সেভাবেই নিজেকে জীবাণুমুক্ত রাখুন। আগামী ১৪-২০ দিনের একটা স্বাস্থ্যসম্মত প‌রিকল্পনা মাথায় রাখুন। আপনার আশেপাশের অন্যদেরকেও এই প‌রিকল্পনায় যুক্ত করুন (কারণ আপনি একা এটি মানলে চলবে না, সবাইকেই মানতে হবে)।
তাহলে, হয়ে যাক ১৪ দিনের একটি চ্যালেঞ্জ, আর ফিরে আসুক হারানো সুদিন।

লেখক:
তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা 
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সচিবালয়, ঢাকা।


ঢাকা/তারা/নাসিম