ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যুবলীগের লড়াই ও সংগ্রামের ৪৮ বছর

গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ১১ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১২:৪৭, ১১ নভেম্বর ২০২০
যুবলীগের লড়াই ও সংগ্রামের ৪৮ বছর

বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর হাজারো লড়াই, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কেটে গেছে ৪৮ বছর। তবুও দেশ, মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পিছপা হয়নি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। বরং বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় যুবলীগ দক্ষিণ এশিয়ার একটি সর্ববৃহৎ শক্তিশালী যুব সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১১ নভেম্বর যুবলীগের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। যুবলীগের পরবর্তী পথচলা সাফল্যমণ্ডিত হোক সেই প্রত্যাশা করি।

এ দেশের যুব আন্দোলনের পথিকৃৎ শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সব ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের অধিকার তথা জাতীয় চার মূলনীতিকে সামনে রেখে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুব সমাজের অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠাই যুবলীগের মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্য থেকে স্বাধীনতা ও প্রগতিকামী যুবক ও যুব মহিলাদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তোলাই যুবলীগের উদ্দেশ্য। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যুবলীগ নেতাকর্মীরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও দেশগড়ার কাজে আত্মনিয়োগের পাশাপাশি অপশক্তি ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে বারবার রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করার মধ্য দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে গিয়ে বগুড়ায় যুবলীগ নেতা আব্দুল খালেক খসরু, চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতা মৌলভী সৈয়দ আহমদ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যুবলীগ নেতা নূর হোসেনের তাজা রক্তের ঋণ শোধ করার মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয় স্বৈরশাসক এরশাদ। ১৯৯০ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৫৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ বদু এরশাদবিরোধী আন্দোলেন মারা যান। এছাড়া ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুবলীগের অনবদ্য ভূমিকা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, বিএনপি জোট সরকারের সরাসরি মদদে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে যুবলীগ ছিলো সোচ্চার ও অপ্রতিরোধ্য। ২০০৬ সালের ২৮  অক্টোবর লগি-বৈঠা আন্দোলন, ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আওয়ামী যুবলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

১/১১ এর প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কারান্তরীণ হলে তার মুক্তির আন্দোলনে গ্রেপ্তার হয়ে কারা নির্যাতনের শিকার হয় শত-সহস্র যুবলীগ নেতা-কর্মী। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লবের অগ্রভাগে আওয়ামী যুবলীগের অবদান ছিল অসামান্য। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আসামিদের বিচারকাজ শেষ এবং ২০১৩ সালের ৫ এবং ৬ মে হেফাজতের ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ সরকারের নিরবচ্ছিন্ন ছায়াসঙ্গী হিসেবেও যুবলীগ রাজপথে সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। ঠিক তখন বিএনপি জামায়াত আগুন, বোমা, সন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করলে যুবলীগ তাদের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সর্বশেষ গত বছরের  ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিপুল বিজয়ের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা। তবে নির্বাচনের আগে পূর্বের ন্যায় সেই বিএনপি জামায়াত নানা ষড়যন্ত্র করে কীভাবে নির্বাচনকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা যায়। কারণ বিএনপি জামায়াত আগে থেকেই জানতো জনগণ তাদের সাথে নেই, যে কারণে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছিল কিন্তু যুবলীগ সেটা হতে দেয়নি। যুবলীগ রাজপথে থেকে তাদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছে। আগামীতেও যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে যুবলীগ দেশ, মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করবে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাতটি জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনটির সবশেষ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর। যুবলীগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় সভায় শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান ও মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক করে দায়িত্ব অর্পণ করেন।

যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই প্রথম প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘যুবলীগের একজন চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থেকে কাজ করব, আপনারা আমার শক্তি হবেন, আমার বাবা মণি বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য এই সংগঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তার কন্যার দেশের প্রতি হৃদয়ের ভালোবাসা থেকে আমি সাহস পাই। তাই আজ আমি আপনাদের সামনে বলতে চাই, আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হচ্ছে আমি সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে তা পালন করব।’

অন্যদিকে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি যুবলীগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে আত্মপ্রত্যয়ী। তারপর থেকে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল যুবলীগকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যুবলীগ কর্মীদের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের আদর্শ বাস্তবায়ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করেন। যার ফলে বর্তমানে পরশ-নিখিলের নেতৃত্বে সংগঠন আরো বেশি সুসংগঠিত হয়েছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে যুবলীগ। এমনকি যখন যুবলীগের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সংগঠন-বিরোধী কাজের অভিযোগ পেয়েছে ঠিক তখনি তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে প্রমাণ হয় অন্যায়কারীদের যুবলীগে জায়গা নেই।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত, মানুষ নানা সংকটে জর্জরিত ঠিক তখনি রাজপথের লড়াই সংগ্রামের সংগঠন যুবলীগ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশে যুবলীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিক সচেতনতায় মাঠে নেমেছিল। প্রথমে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও মাস্ক বিতরণ করে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে লকডাউন শুরু হওয়ায় পথচারী, ভাসমান মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে। ২৪ ঘণ্টা নাগরিক সেবা প্রদান করেছে। যুবলীগের কর্মী থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা যার যার সাধ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। মুজিববর্ষের কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ‘গাছ লাগাই, জীবন বাঁচাই’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে যুবলীগ।

ফলজ, বনজ এবং ঔষধি- এই তিন রকম বৃক্ষরোপণে অংশ নিচ্ছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। এই নির্দেশনার পর মহানগর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়সহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংগঠনের পাশাপাশি বক্তিগত উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। করোনার সময় যখন ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। ঠিক তখনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশে যুবলীগের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের পাকা ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। এমনকি ধান মাড়াই করে গোলায় ভরে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনায় আক্রান্তের ভয়ে যখন পরিবারের আত্মীয়-স্বজন করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন কাজে এগিয়ে আসেনি ঠিক তখন যুবলীগ করোনায় মৃত ব্যক্তির জানাজা থেকে শুরু করে দাফন কাজ সম্পন্ন করেছে। এর ফলে করোনা সংকটকালীন অবস্থায় সাধারণ মানুষের কাছে  যুবলীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষ্যে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিদিন মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া যুবলীগ সারাদেশে অসহায়, হত দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে। আগস্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দোয়া মাহফিল, তবারক বিতরণ, কোরআন খতমসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে যুবলীগ।

জাতীয় সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যুবলীগের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, ‘যুবলীগ এই সংকটে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লাশ দাফনে কাজ করেছে। যুবলীগের পক্ষ থেকে ৪২ লাখ পরিবারে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের দুই হাজার পাঁচশ হেক্টর জমির ধান কেটে দিয়েছে। মুজিববর্ষে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। করোনায় সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উদ্দেশ্য নিয়ে শেখ ফজলে শামস্ পরশকে চেয়ারম্যান ও মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেটা ইতোমধ্যে সফলতা অর্জন করতে চলেছে।

পরশ-নিখিলের নেতৃত্বে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে যুবলীগ। যুবলীগ তাদের হারানো ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরে পেয়েছে। সামনে যুবলীগ হবে মানবতার যুবলীগ যা আত্নমানবতায় মানুষের কল্যানে সর্বদা নিয়োজিত থাকবে এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার থাকবে ও জাতির যে কোনো সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সর্বোপরী এদেশের যে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি প্রতিহত করার মূল ভূমিকায় অবতীর্ণ থাকবে আন্দোলন-সংগ্রামের অপ্রতিরোধ্য সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

লেখক: সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ

ঢাকা/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়