৮৭ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের দাবি বিএনপির
করোনাভাইরাস রোধ এবং এর প্রভাব মোকাবিলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল বা অর্থনৈতিক প্যাকেজ গঠনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
শনিবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন খাতে বরাদ্দের পরিমান উল্লেখ করে এ দাবি জানান।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে দলের বক্তব্য তুলে ধরেছি। এখন শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের জন্য কতগুলো প্রস্তাবনা রাখছি। এরমধ্যে স্বল্পমেয়াদী কিছু পদক্ষেপ দ্রুত নিতে হবে। কিছু মধ্যমেয়াদী ও কিছু দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা যে সুপারিশগুলো করছি, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির ৩ শতাংশ অর্থ সমন্বয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল ঘোষণা করতে হবে। শাটডাউন প্রত্যাহার হলে নতুন করে একটি সংশোধিত আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে, যাতে সব সেক্টরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সাধারণ ছুটিপূর্ব স্তরে পৌঁছাতে পারে।’
স্বল্প মেয়াদী পদক্ষেপে মির্জা ফখরুল দিন আনে দিন খায় শ্রেণির সবাইকে তিনমাসের জন্য নগদ ১৫ হাজার টাকা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ত না করে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে যুক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি। পাশপাশি আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয় ও দুই বেলা তৈরি খাবার দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। এজন্য ৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করেন তিনি।
৮০ লাখ প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের সহযোগীতা করতে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন যাতে বন্ধ না হয়, সেজন্য বীজ, সার, কীটনাশক ও ভর্তুকীসহ ৫ হাজার কোটি টাকা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কৃষকদের বিতরণ করতে হবে। পোল্ট্রিসহ সব কৃষি ঋণের কিস্তি ও সুদ মওকুফ করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া সব ক্ষুদ্র ঋণ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ করতে হবে।
এছাড়া ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশফেরতদের সহযোগিতা দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেসব প্রবাসী খালি হাতে দেশে ফিরেছেন, তাদের নূন্যতম ১৫ হাজার টাকা করে আপদকালীন আর্থিক সাপোর্ট দিতে হবে, যাতে তারা তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারেন। এজন্য এ খাতে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে সম্পৃক্ত হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি বিবেচনায় বীমা করতে হবে।
বয়স্ক নারী, বিধবা, প্রতিবন্ধু, ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের জন্য মাসে ৫ হাজার টাকা তিন মাস বিতরণ করতে এ খাতে আপাতত ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন বিএনপি মহাসচিব।
দেশের বরেণ্য অর্থনীতিবিদদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠনের দাবিও ছিল বিএনপির প্রস্তাবে।
ঢাকা/নূর/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন