ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

২১ আগস্ট হামলায় দণ্ডিতরা কোথায়

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ২১ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
২১ আগস্ট হামলায় দণ্ডিতরা কোথায়

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী।

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় দণ্ডিতদের জীবিতরা কেউ কারাগারে এবং কেউ কেউ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন।

ওই হামলার মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছে।

এই রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে আপিল মামলা শুনানির অপেক্ষায় আছে। ইতোমধ্যে রায়ের পেপারবুকও প্রস্তুত হয়েছে।

গ্রেনেড হামলা মামলার ৩ আসামির (জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুল) অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় বাকি ৪৯ জন আসামির বিচার হয়। এদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর এবং আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ৩১ জন বর্তমানে কারাগারে আছেন। এছাড়া তারেক রহমান এবং হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জনকে মামলার নথিতে পলাতক দেখানো হয়েছে।

দণ্ডিতদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন। এক-এগারোর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন গিয়েছিলেন তিনি এবং সেই থেকে সেখানেই আছেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে যাবজ্জীবন শাস্তি দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে তাকে পলাতক হিসেবে দেখানো হয়েছে।

বিএনপি সরকারের সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা লুৎফুজ্জামান বাবর এক-এগারোর সরকার ক্ষমতাসীন হবার গ্রেপ্তার হন। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও বাবরের ফাঁসির রায় হয়েছে।

দণ্ড পাওয়া আরেক আসামি তৎকালীন শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু। গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই তাজুল ইসলাম গ্রেনেড হামলার পর থেকে সে বিদেশে পালিয়ে আছেন। বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় আছেন বলে জানা যায়।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। বর্তমানে তার অবস্থান সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত নয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর তাকে আটক করা হয়। এছাড়া ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম বর্তমানে কারাগারে। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তারও ফাঁসির রায় হয়েছে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ পলাতক রয়েছেন। ধারণা করা হয়, তিনি সৌদি আরবে পলাতক রয়েছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গ্রেনেড হামলা মামলার আরেক আসামি হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক হানিফ পলাতক রয়েছেন।

এ ছাড়া এ মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক কারাগারে রয়েছেন। গ্রেনেড হামলার সময়ের পুলিশ প্রধান শহিদুল হকও কারাগারে আছেন।

গ্রেনেড হামলার সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বে থাকা আশরাফুল হুদা ও অতিরিক্ত পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে থাকা খোদাবক্স চৌধুরী কারাগারে রয়েছেন।

সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সাবেক সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান এবং এএসপি আব্দুর রশিদও কারাগারে আছেন।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সাবেক সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম কানাডায় অবস্থান করছেন। আরেক আসামি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন এক এগারোর সরকারের সময়ে আমেরিকা চলে যান।

ঢাকা/পারভেজ/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়