ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা: শাস্তির বাইরে ৯৯.৬৩ শতাংশ অপরাধী

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৩, ১১ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ২০:৩৮, ১১ অক্টোবর ২০২০
নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা: শাস্তির বাইরে ৯৯.৬৩ শতাংশ অপরাধী

২০০১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যার যতগুলো মামলা হয়েছে তার মধ্যে বিচার হয়েছে মাত্র ৩.৫৭ শতাংশ। আর শাস্তি হয়েছে মাত্র ০.৩৭ শতাংশের। অর্থাৎ শাস্তির বাইরে থেকে যাচ্ছে ৯৯.৬৩ শতাংশ মামলার অপরাধী।

রোববার (১১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ।

বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাসদ সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, বর্ধিত পাঠচক্র ফোরামের সদস্য নিখিল দাস, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহ্বান হাবিব বুলবুল, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান নারী ও শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি ঘটনার বিভৎসতাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে আর একটি ঘটনা। দেশের প্রায় প্রতিটি নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত অথবা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সংগঠিত হচ্ছে। নারীর ওপর সহিংসতা এবং ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজির খুব একটা নেই। ফলে বিচারহীনতার বিষয়টি এখন সমাজে গেড়ে বসেছে। শাসকদের প্রশ্রয় ও বিচারহীনতার ফলে ধর্ষকরা বেপরোয়া হয়ে পড়ছে। নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা প্রতিরোধ করতে গেলে সমাজে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের জাগরণ ঘটাতে হবে। 

তারা বলেন, নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণের ঘটনা সমাজে প্রতি বছর বেড়েই চলছে। ২০১৮ সালে ধর্ষণের সংখ্যা ছিল ৭০০টি, তা ২০১৯ সালে বেড়ে ১৪০০ হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ দরিদ্র নারী, যারা বিচার চাইতে পারে না। ২০২০ সালে এ পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনা ১০০০ ছাড়িয়েছে। কিন্তু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যার বিপরীতে বিচারের ও শাস্তির পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে এর ভয়াবহতা আরও প্রকট রূপে প্রকাশ পায়। 

বক্তারা সব ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার, সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত, বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা দূর, পুলিশ নয় বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ধর্ষণের তদন্ত করা, বিচারের রায় দ্রুত বাস্তবায়ন, ধর্ষিতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, মামলার শুনানিকালে জেরার নামে ধর্ষিতাকে পুনরায় নির্যাতন না করা, ধর্ষণের প্রমাণের জন্য ডিএনএ টেস্ট এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার, বিজ্ঞাপনে, নাটকে, সিনেমায় নারী দেহের প্রদর্শন বন্ধ, ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে নারীর প্রতি কটূক্তি ও অশ্লীল মন্তব্য নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে আইন করার এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তারা।

ঢাকা/মামুন/এসএম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়