ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

‘বিএনপির মুখে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভূতের মুখে রাম নাম’

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৮, ২০ নভেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৪:৩৪, ২০ নভেম্বর ২০২০
‘বিএনপির মুখে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভূতের মুখে রাম নাম’

ওবায়দুল কাদের (ফাইল ফটো)

বিএনপির শামসনামলে সাংবাদিক হত‌্যা ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির মুখে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা ভূতের মুখে রাম নাম।

শুক্রবার (২০ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটের মিট দ‌্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানের নিজের বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।  

ওবায়দুল কাদের বলেন, গণমাধ্যম আর মতপ্রকাশের কোনো স্বাধীনতার কথা তারা বলছেন। খুলনায় সাংবাদিক মানিক সাহাকে কারা হত্যা করেছিলো, হুমায়ুন কবির বালুর হত্যাকাণ্ডের কথা ভুলে গেছেন? শাসছুর রহমান, দীপঙ্কর চক্রবর্তীসহ অসংখ্য সাংবাদিক হত্যা কারা করেছিল?

‘সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচার তো হয়নি, বরং বিচারের নামে হত্যাকারীদের রক্ষা করা হয়েছে।  বিএনপির মুখে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা ভূতের মুখে রাম রাম–ধ্বনির মতোই।  ২০০১ সালে ক্ষমতাগ্রহণের প্রথম ৩ মাসে ৫০ জন সাংবাদিক আক্রমণের স্বীকার হয়েছিল।”

অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অবস্থান অত্যন্ত কঠোর এবং স্পষ্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন খাতের অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।  এর আগে ক্যাসিনো বিরোধী শুদ্ধি অভিযান চালিয়েছে সরকার।  এসব অনিয়ম কেউ সরকারকে দেখিয়ে দেয়নি। সরকার নিজস্ব মেকানিজমে তা উদঘাটন করে স্বপ্রণোদিত হয়েই অভিযান শুরু করেছে। সম্প্রতি ধর্ষণসহ নারীর প্রতি অবমাননা এবং যেকোনো অনিয়ম, দুর্নীতি, সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে শেখ হাসিনা সরকার।”

‘সরকারের কাছে অপরাধির কোনো দলীয় পরিচয় নেই।  অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখেছে সরকার। দলীয় পরিচয় কারো আত্মরক্ষার ঢাল হতে পারেনি।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশের রাজনীতিতে দুটি ধারা প্রবাহমান। একদিকে একাত্তরের অবিনাশী চেতনা অপরদিকে সাতচল্লিশের চেতনা। একদিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ধারায় এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন অপরদিকে সাম্প্রদায়িকতায় ভর করে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা। একদিকে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান মনস্ক প্রজন্ম তৈরির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রত্যয় অপরদিকে মিথ্যাচার, নেতিবাচকতা আর পশ্চাদপদতার সংস্কৃতি।’

এ সময় বিএনপি সরকারের শাসনামলের সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র তুলে দরে তিনি। পদ্মা সেতু প্রকল্প, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহেশখালি-মাতারবাড়ি সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপন, কর্ণফুলি নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলি টানেল নির্মাণসহ সরকারের বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।

বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং চাপমুক্ত হয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক নানান ঘটনায় জনগণ দেখেছে, আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রায় এসেছে এবং শাস্তি ভোগ করছে। সরকার হস্তক্ষেপ করলে তো এমন হওয়ার কথা নয়।’

‘এ থেকে প্রমাণ হয় বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে। বিএনপি দলের পক্ষে রায় এলে বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানায় আর বিপক্ষে রায় গেলে বলে সরকার হস্তক্ষেপ করছে। এমন দ্বিচারিতা বিএনপির সবসময়ের রাজনৈতিক সঙ্গী।’

আমেরিকার নির্বাচনে শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, বিরোধীদলেরও শেখার অনেক কিছু আছে মন্তব‌্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান।  গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার আওতায় থেকে কমিশন কাজ করছে।  তারা ফলো করবে নিজস্ব বিধি-বিধান, অন্য দেশে কী হল তা নয়। দেশে অবস্থা এমন হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে বিএনপিকে জয়লাভের নিশ্চয়তা দিতে হবে।’

‘বিএনপিকে জয়ী করাই নির্বাচন কমিশনের যেন মূল দায়িত্ব। বিএনপি যেকোনো নির্বাচনে পরাজিত হলেই দায় চাপায় সরকার, নির্বাচন কমিশন আর নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর। আর জয়ী হলে বলে, সরকার হস্তক্ষেপ না করলে আরও বেশি ভোটে জিততে পারতো।”

পারভেজ/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়