বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য অবমাননা ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ।
রোববার (৬ ডিসেম্বর) ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও বিভিন্ন ইউনিট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাবি ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনে উপস্থিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন।
মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসি সংলগ্ন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। এরপর বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মিছিল শেষে সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, বাংলাদেশের মানচিত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের প্রতিটি জনগণের হৃদয়ের অবস্থান করছেন। ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে জনগণের হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুকে দূরে রাখা যাবে না। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। ধর্ম ব্যবসায়ীরা ধর্মকে পুঁজি করে অরাজকতা তৈরি করছে। এদের উদ্দেশ্য একটি।
তিনি বলেন, ৭১ সালেও তারা এ দেশকে অস্বীকার করেছিল। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ধর্মের নাম করে অশান্তি তৈরি করলে এক চুলও ছাড় দেওয়া হবে না। ছাত্রলীগ সব সময় শান্তিতে বিশ্বাস করে।
ভাস্কর্য টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়া হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশ্য আমরা জানি, হেফাজত কিসের হেফাজত করছে? জামায়াতে ইসলামের হেফাজত?’
ছাত্রলীগ সভাপতি জয় বিক্ষোভ সমাবেশে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানান। এছাড়া ভাস্কর্য বিরোধীতাকারীদের কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করার জন্য সরকারসহ গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুরোধ জানান জয়।
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ইমোশন (আবেগ), সংবিধান, রাষ্ট্রীয় স্বার্থ নিয়ে কথা বলার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? এ কথা আপনাদের স্পষ্ট করতে হবে। ওহি নাজিলের মতো সকাল বেলা হঠাৎ করে বলা শুরু করলেন ভাস্কর্য থাকবে না। আজব ব্যাপার! আপনাদের বারবার সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গতকাল আপনারা সীমা লঙ্ঘন করেছেন। ছাত্রলীগ অনেক ধৈর্য ধরেছে। অনেক প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু এখন আর ছাত্রলীগ প্রতিবাদে বিশ্বাস করবে না। আপনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, আপনারা মাদ্রাসা ছাত্রদের বলাৎকার করছেন। মনে রাখবেন অপকর্ম করে দেশে কেউ পার পায়নি। বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলবেন না। যদি কেউ বলেন, জাতির পিতার অবমাননা করেন, তাহলে সেই দেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবেন না। তাদের ঠিকানা হবে কারাগার বা ফাঁসির কাষ্ঠে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ।
এদিকে কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রলীগ।
পারভেজ/সাইফ
আরো পড়ুন