মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়া ভুপেন্দ্রর পাশে আ.লীগ নেতা
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
ভুপেন্দ্র ও তান বাবা মতিলাল অধিকারী
মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও পড়াশোনা চালিয়ে নিতে ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছিলেন ভুপেন্দ্র অধিকারী। বাবা পেশায় বাদাম বিক্রেতা হওয়ায় পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতায় এই শঙ্কায় ছিলেন তিনি।
তবে সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। মেধাবী অথচ আর্থিক অস্বচ্ছল ভুপেন্দ্র অধিকারীর পড়াশোনার সব দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
আব্দুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এটা আমি আমার দায়িত্ব মনে করেছি। একটি ছেলে অভাব-অনটন থেকে শুরু করে কতো ধরনের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে মেডিক্যালে সুযোগ পেয়েছে। অথচ শুধু আর্থিক সংকটের কারণে সব থেমে যাবে। এটা হতে দেওয়া যায় না।’
‘সেজন্য আমি আমার সীমিত সাধ্যের মধ্যে তার পড়াশোর যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছি। আমার চার সন্তানের মতো আমি ভুপেন্দ্রকেও পড়াশোনা করাবো।”
মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হওয়ার মতো কোনো টাকা-পয়সা ছিলো না ভুপেন্দ্র অধিকারীর পরিবারের। আর্থিক অনটনে শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কায় থাকা ভুপেন্দ্র অধিকারীর এই বিষয়টি গণমাধ্যম ও স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে জানতে পারেন আব্দুর রহমান। পরে আব্দুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ভুপেন্দ্রের মেডিক্যালে পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নেন। কথা বলে তার পরিবারের সঙ্গে।
ভুপেন্দ্র নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের দিঘির পাড় গ্রামের মতিলাল অধিকারী ও বাসন্তী অধিকারীর সাত সন্তানের মধ্যে পঞ্চম। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট। বড় দুই ভাই রিকশা চালান।
ভুপেন্দ্রর বাবা মতিলাল অধিকারী একজন বাদাম বিক্রেতা এবং মা গৃহিণী। এতদিন তার বাবা বাদাম বিক্রি করে ভূপেন্দ্রর পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। এখন বয়স হওয়ায় বাদামের ব্যবসা করার সক্ষমতাও তার আর নেই।
ভুপেন্দ্রের বাবা মতিলাল অধিকারীকে আব্দুর রহমান আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আপনাদের অনেক কষ্টের বিনিময়ে আপনাদের ছেলে মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে। এজন্য আপনাদের অভিনন্দন এবং শ্রদ্ধা জানাই। আপনারা ভাববেন না, ওর মেডিক্যালে পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আমি নিলাম। শুধু তাকে নিয়মিত পড়াশোনা করতে বলবেন।’
ভুপেন্দ্রের মা বাসন্তী অধিকারীকে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সমস্যা এটা কোন সমস্যাই না। আমি তার সাথে আছি। সে পড়াশোনা করে আপনাদের স্বপ্নপূরণ করবে এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে এটাই আমি চাই।
ভুপেন্দ্রে অধিকারী এ সময় তার পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রহমানের কাছে চিরকৃতজ্ঞতার কথা জানান।
আবদুর রহমান তাকে বলেন, তুমি কোন কিছু নিয়ে ভাববে না। যখন যা লাগবে তখন তোমার জন্য তা ব্যবস্থা করা হবে। নিয়মিত পড়াশোনা করে মা-বাবার স্বপ্নপূরণের জন্য তোমাকে এগিয়ে যেতে হবে।
এ সময় তিনি তার সাথে যোগাযোগের জন্য ভুপেন্দ্রে অধিকারীকে তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরও দেন।
পারভেজ/সাইফ
আরো পড়ুন