ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হেফাজতের কমিটি বিলুপ্তি দাবি ইসলামী ঐক্যাজোটের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০০:৩৫, ৫ মে ২০২১  
হেফাজতের কমিটি বিলুপ্তি দাবি ইসলামী ঐক্যাজোটের

ইসলামের নৈতিক পদস্খলন, সহিংস কর্মকাণ্ড ও উস্কানিমুলক উগ্রবাদ প্রচেষ্টায় দেশ অস্থিতিশীল করা এবং ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার কারণে হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কমিটি পূর্ণ বিলুপ্ত করাসহ সাত দফা দাবি দিয়েছে চৌদ্দদলীয় শরিক ইসলামী ঐক্যজোট।

মঙ্গলবার দুপুরে (৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী এসব দাবি জানান।

তিনি বলেন, আল্লামা আহমদ শফি এর ইন্তেকালের পর হেফাজত ইসলামের নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক উগ্রবাদীদের অনুসারি, ক্ষমতালোভী একদল আলেম নামধারী কুচক্রিদের হাতে চলে যায়। তারা হেফাজতকে জামায়াত শিবির ও মিত্রদের সহযোগিতায় কওমি মাদ্রাসাগুলোকে কুক্ষিগত করে হেফাজতের ব্যানারে জ্বালাও পোড়াও  লুটপাট ও রাষ্ট্রীয় সম্পদে অগ্নিসংযোগ করে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। তান্ডব চালিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনে বাধা দিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার পতনের বিদেশি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, এসব হেফাজতপন্থী আলেমরা ইসলামের নামে ওয়াজ মাহফিল করে জেহাদের কথা বলে দেশ, স্বাধীনত বিরোধী এমনকি ইসলাম বিরোধী বক্তব্য দিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক বিষ্পাপ ছড়াচ্ছে। এ বিষয়টি সরকারের নজরে আসায় ব্যবস্থা নেয়ায় আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

হেফাজতের বর্তমান কমিটি একেবারে বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে বাকী ছয় দফা দাবি তুলে ধরে মিছবাহুর রহমান বলেন, কওমি মাদ্রাসাগুলোকে তাদের পূর্বসুরিদের ঐতিহ্য অনুযায়ী পরিচালনায় আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল ক্বাওমিয়্যাহ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ঘোষিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। আল হাইয়াতুল উলইয়া এবং বেফাকের মধ্যে অনু্প্রবেশকারী উগ্রবাদী নেতাদের বহিস্কার করে তাদের স্থলে শান্তিপ্রিয় দক্ষ কওমি আলেমদের নিয়োগ দিতে হবে। কয়েকটি কওমি মাদ্রাসায় সাম্প্রতিক সময়ে উগ্র সহিংস কার্যক্রমে জড়িত ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ মাদরাসা কর্তপক্ষ তাদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। তান্ডবের ঘটনায় জড়িত বাংলাদেশে খেলাফত মজলিসের সম্পৃক্ততার কথা বলা হচ্ছে, তা সত্যি হয়ে থাকলে দলটির নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। ওয়াজ অথবা তাফসির মাহফিলের নামে পবিত্র কোরআন হাদিস অপব্যখ্যা করে রাষ্ট্রদ্রোহী ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান বন্ধের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ইসলামী ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে একটি কাউন্সিল গঠন করে এই তথাকথিত ওয়ায়েজিনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাণ্ডব সৃষ্টির নেতৃত্বদানকারী হেফাজতকে দেশি- বিদেশি অর্থ যোগানদাতাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে।

জুন মাসের ঢাকায় একটি ওলামা সমাবেশ করবে ইসলামী ঐক্যজোট। তাছাড়া তান্ডবের ঘটনায় কোনো নিরীহ আলেম ওলামা যাতে হয়রানি শিকার না হয়, গরিব কওমি শিক্ষকদের বিশেষ অনুদান ব্যবস্থা, আবাসিক হেফজখানা এবং যতসম্ভব কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা রুহুল আমিন খান, আল্লামা ওয়াহিদুজ্জামান, মাওলানা জহিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আল্লামা ছালেহ, মুফতি মনিরুজ্জামান রাব্বানি, আল্লামা সিরাজুল ইসলাম, আল্লামা ফখরুল ইসলাম, অধ্যাপক মাওলানা আবুবকর, মুফতি শাব্বির আহমেদ কাসেমি, মুফতি ফয়েজ উল্লাহ, মুফতি জসিমুদ্দিন প্রমুখ।

নঈমুদ্দীন/নাসিম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়